Thank you for trying Sticky AMP!!

মাদকমুক্ত জীবনে ফেরার শপথ নেবেন ২১৪ জন

কুষ্টিয়া জেলায় মাদক কেনাবেচা ও সেবনে জড়িত ২১৪ জন ব্যক্তি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার শপথ নেবেন। আগামী ৪ মে কুষ্টিয়া স্টেডিয়ামে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তাঁরা শপথ নেবেন। সেখানে জেলা পুলিশের আয়োজনে মাদকবিরোধী সমাবেশ হবে। ওই দিন বেলা ১১টায় এই অনুষ্ঠানের সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

আজ শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় সংবাদ সম্মেলন করে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত এ তথ্য দেন। পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এ কে এম জহিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা) মোস্তাফিজুর রহমান, জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (মিরপুর সার্কেল) ফারজানা শরীফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সুপার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যাঁরা শপথ নেবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে। আমাদের কাছে তথ্য আছে, মাদক ব্যবসা করে বেশ কিছু দালান ও সম্পত্তি করা হয়েছে, সেগুলো বাজেয়াপ্ত করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, তিনি জেলায় মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই মাদকে জড়িত ব্যক্তিরা আত্মসমর্পণ করতে চাইছেন। তাঁদের সংখ্যা বেড়ে গেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়। তাই আগামী ৪ মে বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া স্টেডিয়ামে মাদকবিরোধী সমাবেশ ও শপথগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে। মাদকবিরোধী অভিযানে যাঁরা বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন, তাঁদের কয়েকটি পরিবারের সদস্যরাও শপথ অনুষ্ঠানে থাকবেন। এখন পর্যন্ত ২১৪ জনের তালিকা হয়েছে। তালিকা বাড়তেও পারে, কমতেও পারে। তবে বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। তালিকায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় ২৬, কুমারখালীতে ২৪, খোকসাতে ১১, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানাতে ৫, মিরপুরে ৪৩, ভেড়ামারায় ১০ এবং দৌলতপুরে সবচেয়ে বেশি ৯৫ জন। তাঁদের নাম-পরিচয় ৪ মে শপথ অনুষ্ঠানে জানানো হবে।

পুলিশ সুপার বলেন, এটা আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান নয়, এটা শপথগ্রহণ। যাঁরা মাদক বিক্রি করতেন, তাঁরা বিক্রি না করার ওয়াদা করবেন। তাঁদের মধ্যে দেশের বাইরে পালিয়ে থাকা কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী আছেন। তবে পরোয়ানাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের কারাগারে পাঠানো হবে। বাকিদের নজরদারি ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

দৌলতপুর সীমান্তে মাদক আসার রুট বন্ধের ব্যাপারে পুলিশ সুপার বলেন, ‘সীমান্তে বিজিবি কাজ করে। কয়েক দিন আগে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সাংসদ, বিজিবি কমান্ডার, জেলা প্রশাসক মিলে সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে মাদক পাচারের মূল পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করেছি। সেখানে বিজিবি কঠোর অবস্থানে আছে, আরও ব্যবস্থা নেবে। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে ওই এলাকা থেকে মাদক আর কুষ্টিয়ায় প্রবেশ করবে না।’

পুলিশ সুপারের দাবি, মাদকে যাঁরা জড়িত, তাঁরা সবাই সমান। গডফাদার বলে কিছু নেই। এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার স্বীকার করেন, মাদক ব্যবসার প্রশ্রয়ে রাজনীতিবিদ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ সাংবাদিকেরাও আছেন। তাঁদের তালিকা প্রক্রিয়াধীন। ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যেদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে তাঁদের কারাগারেও পাঠানো হবে।