Thank you for trying Sticky AMP!!

সালমান শাহ খুন হয়েছেন, দাবি রুবির

প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহ খুন হয়েছেন বলে ইউটিউবে ছেড়ে দেওয়া ভিডিওতে দাবি করেছেন রাবেয়া সুলতানা ওরফে রুবি নামের এক নারী। সালমানের সেই সময়কার প্রতিবেশী এবং তাঁর স্ত্রী সামিরার ঘনিষ্ঠ ছিলেন বিউটিশিয়ান রুবি। সালমানকে হত্যার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই এর সঙ্গে যুক্ত হিসেবে রুবির নাম আসে। আদালতে সালমানের মায়ের দায়ের করা হত্যার অভিযোগে আসামিদের তালিকায় আট নম্বরে ছিল রুবির নাম। তাঁর এই ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল।

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন ওরফে সালমান শাহের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। ঘটনার পর সালমানের বাবা একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। সালমানের পরিবার শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, এটা হত্যাকাণ্ড। ২১ বছর হতে চলেছে। কিন্তু এখনো এটা স্পষ্ট হয়নি যে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, না তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সালমানকে হত্যার দায় স্বীকার করে রেজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ নামের এক তরুণ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই জবানবন্দির ভিত্তিতে সালমানের মা হত্যার অভিযোগে ১১ জনকে আসামি করে আদালতে নালিশি মামলা করেন। ওই ১১ আসামি হলেন সালমানের স্ত্রী সামিরা হক, শাশুড়ি লতিফা হক লুসি, ধনাঢ্য আজিজ মোহাম্মদ ভাই, রেজভী আহমেদ ফরহাদ, চলচ্চিত্রের খল অভিনেতা আশরাফুল হক ডন, নজরুল শেখ, ডেভিড, রাবেয়া সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ এবং সালমানের বাসার গৃহকর্মী আবুল হোসেন খান। সেই নালিশি মামলাটি অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে মিলিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সালমানকে হত্যার অভিযোগ স্বীকার করে রেজভী আহমেদ যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ওই রাতে ডনের নেতৃত্বে সালমানের বাসায় গেলে নিচতলার একটি দরজা খুলে দিয়েছিলেন রুবি। তাঁর ঘর থেকে আজিজ মোহাম্মদ ভাই বের হয়ে হত্যাকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। রুবি ইস্কাটনে যে ভবনে সালমান থাকতেন, তাঁর সামনে মে ফেয়ার বলে একটি বিউটি পারলার চালাতেন। তাঁর চীনা স্বামী রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতেন।

সম্প্রতি ইউটিউবে ছাড়া ভিডিওতে রুবি বলেছেন, সালমানকে খুন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই খুনের বিষয়ে আমি সব জানি। যেভাবেই হোক আবার যেন মামলা তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়। আমি যেমন করেই হোক আদালতে সাক্ষ্য দেব।’ ভিডিওতে সালমানের মাকে উদ্দেশ করে তিনি বারবার বলেছেন, ‘ইমন আত্মহত্যা করে নাই, তাকে খুন করা হইছে। নীলা ভাবি, প্লিজ, কিছু একটা করেন, কিছু একটা করেন।...আমার হাজব্যান্ড এইটা করাইছে আমার ভাইরে দিয়ে।...সামিরার ফ্যামিলি করাইছে...। আমার ছোট ভাই রুমিরে দিয়া খুন করানো হইছে। রুমিরেও খুন করা হইছে। আমি জানি না রুমির কবর কোথায় আছে। রুমির লাশ যদি কবর থেকে তুলে ঠিকমতো আবার পোস্টমর্টেম করে, তাহলে দেখা যাবে যে ওরা গলা টিপে মাইরা ফেলছে।...ওরা আমারেও খুন করার চেষ্টা করছে। এই কেস যেন না শেষ হয়।’

মামলাটির তদন্ত সংস্থা পিবিআইর বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সালমান শাহের বিউটিশিয়ান হিসেবে ছিলেন রুবি। সালমানের বাসায় প্রায়ই যেতেন। ঘটনার আগে-পরে ওই বাসাতেই তাঁর অবস্থান ছিল। সালমান মারা যাওয়ার পরে রুবি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। আমরা তাঁকে খোঁজার ব্যাপক চেষ্টা করেছি। অনেক দিন পরে তাঁকে পেলাম ইউটিউবে। তবে তাঁর কথাগুলো যাচাই করে দেখতে হবে তা কতটা সত্য আর কতটা মিথ্যা। আবার এমনও হতে পারে কেউ তাঁকে দিয়ে বলাচ্ছে। এসবই তদন্তের বিষয়।’

যোগাযোগ করা হলে লন্ডনে অবস্থানরত সালমান শাহর মা নিলুফার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁর এ বক্তব্যের পরে বলার আর কোনো অপেক্ষা রাখে না যে আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছিল। আমি জানতাম এই দিনটা আমার আসবে। রুবি এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় আছে। তাঁকে নিরাপত্তা দিয়ে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হোক। আর রুবি যাদের নাম বলেছে, তাদের এখনই গ্রেপ্তার করা হোক।’ তিনি বলেন, ‘আমি বিচার চাই। এত বছর আমি হতাশায় ভুগছি। দেশে আমারও নিরাপত্তা নেই। যার কারণে আমি লন্ডনে আছি।’

সালমান শাহ হত্যার বিচার ও আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ১৬ আগস্ট প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান নিলুফার চৌধুরী। সেদিনই তিনি পরবর্তী আরও কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।