Thank you for trying Sticky AMP!!

‘ওসি স্যারের সঙ্গে আর বেয়াদবি করবি?’

মুস্তাকিমের পায়ে আঘাতের চিহ্ন

চট্টগ্রামে ডায়ালাইসিসের খরচ বাড়ানোর প্রতিবাদ করায় গ্রেপ্তার মো. মুস্তাকিমকে থানায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর এক পুলিশ সদস্য লাঠি দিয়ে তাঁকে মারধর করেন। তাঁর কোমরের নিচ থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত লাঠির আঘাতে লাল হয়ে যায়। মারধর থেকে বাঁচতে হাত দিলে তাঁর হাতেও আঘাত লাগে।

রোববার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান মুস্তাকিম। গত মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাঁচলাইশ থানার পুলিশ।

মুস্তাকিম প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরে (মঙ্গলবার) গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর ওই দিন রাত আটটার দিকে পাঁচলাইশ থানার হাজতখানা থেকে তাঁকে এক পুলিশ সদস্য পার্শ্ববর্তী একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে শুধু একজন পুলিশ সদস্য ছিলেন। পোশাকে তাঁর নেমপ্লেট ছিল না। লাঠি দিয়ে তাঁকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পেটান ওই পুলিশ সদস্য। তবে ওসি ছিলেন না। দেখলে চিনবেন। পেটানোর সময় বারবার ওই পুলিশ সদস্য তাঁকে বলেছেন, ‘ওসি স্যারের সঙ্গে আর বেয়াদবি করবি?’

এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন মজুমদার আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, থানায় মুস্তাকিমকে মারধর কিংবা নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

মুস্তাকিমের পায়ে আঘাতের চিহ্ন

এদিকে মুস্তাকিমকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবর আজ আবেদন করেছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন। একই সঙ্গে মুস্তাকিমকে আসামি করে পুলিশের করা মামলাটি র‍্যাব, পিবিআই কিংবা সিআইডিকে দিয়ে তদন্তের দাবি জানান।

হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব জিয়া হাবিব আহসান আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, মুস্তাকিম জামিনে মুক্তির পর জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারের পর তাঁকে থানায় নিয়ে মারধর করা হয়েছে। জড়িত পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করে বিচারের দাবি জানিয়ে আইজিপি বরাবরে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। তাঁরা ব্যবস্থা না নিলে হেফাজত নির্যাতন নিবারণ আইনে মামলা করা হবে।

হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব আরও বলেন, মুস্তাকিমকে পুলিশ মারধর করে উল্টো তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এ জন্য মামলাটি র‍্যাব, পিবিআই কিংবা সিআইডিকে দিয়ে তদন্তের জন্য হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

Also Read: ডায়ালাইসিসের খরচ জোগানো একমাত্র ছেলেটি কারাগারে, দিশাহারা মা

ডায়ালাইসিস ফি কমানোর দাবিতে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রোগীর স্বজনেরা। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বিক্ষোভকারীদের। এ সময় মুস্তাকিমকে আটক করে পুলিশ। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মুস্তাকিমের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৫০ থেকে ৬০ জন কিডনি রোগীর স্বজনকে আসামি করে মামলা করে। রোববার মুস্তাকিমের জামিনের আবেদন করা হয় আদালতে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবীসহ চট্টগ্রামে আইনজীবীরা জামিন শুনানিতে অংশ নেন। দুপুরে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

Also Read: মায়ের ডায়ালাইসিসের খরচ জোগানো মুস্তাকিমের জামিন মঞ্জুর