জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের মর্গের সামনে ছবি দেখিয়ে স্ত্রী লামিয়া আক্তারের খোঁজ করছেন আমিনুল ইসলাম
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের মর্গের সামনে ছবি দেখিয়ে স্ত্রী লামিয়া আক্তারের খোঁজ করছেন আমিনুল ইসলাম

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত

মেয়ে অক্ষত, ২১ ঘণ্টায়ও খোঁজ মেলেনি মা লামিয়ার

তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে আসমাউল হোসনা জাইরাকে আনতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়েছিলেন মা লামিয়া আক্তার সোনিয়া। জাইরাকে অক্ষত পাওয়া গেছে। কিন্তু গতকাল সোমবার থেকে মা লামিয়ার কোনো খোঁজ নেই। নিখোঁজের পর ২১ ঘণ্টা পেরোলেও এখনো তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট মর্গে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে লামিয়া আক্তার সোনিয়ার সন্ধান করছিলেন তাঁর স্বামী আমিনুল ইসলাম জনি।

বার্ন ইনস্টিটিউটের মর্গের সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মেয়ে আসমাউল হোসনা জাইরাকে মাইলস্টোন স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন লামিয়া। তখনই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এর পর থেকে তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘উত্তরার সব কটি হাসপাতালে খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি। বার্ন ইউনিটেও নেই। আর কোথায় গেলে পাব বুঝতে পারছি না। আমার ছেলেকে কী জবাব দেব, জানি না।’

আমিনুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর সহকর্মী ও স্বজনেরাও লামিয়াকে খুঁজতে এসেছেন। তাঁরা বলেন, গতকাল থেকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মনসুর আলী হাসপাতাল, লুবানা জেনারেল হাসপাতাল, ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী, কুর্মিটোলা, ঢাকা মেডিকেল, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, সিএমএইচ—সবখানে খোঁজ করা হয়েছে। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি।

আসমাউল হোসনা মাইলস্টোনের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। দুর্ঘটনার সময় সে নিরাপদেই ছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ পরে তাঁকে অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছে।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক‍্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই আগুন ধরে যায় স্কুল ভবনে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের নিহত হওয়ার তথ্য জানা গেছে।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী চিকিৎসক মো. সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৭৮ জন। এ পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।