Thank you for trying Sticky AMP!!

আপত্তিকর ছবি ছড়ানোর হুমকি দিয়ে তরুণীকে নির্যাতনের অভিযোগ

নওগাঁর নিয়ামতপুরে এক কলেজছাত্রীকে (১৮) আটকে রেখে আপত্তিকর ছবি তুলে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ওই ছাত্রীর মাথার চুলও কেটে দেওয়া হয়। কলেজছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে সোমবার সকালে ওই ছাত্রীর বাবা নিয়ামতপুর থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ রায়হান আলম (২৫) নামের স্থানীয় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, নিয়ামতপুর উপজেলার জাজিরা গ্রামের বিবাহিত রায়হান আলমের সঙ্গে এক মাস আগে মুঠোফোনে একাদশ শ্রেণিপড়ুয়া ওই ছাত্রীর পরিচয় হয়। কথা বলার একপর্যায়ে রায়হান মেয়েটিকে খারাপ প্রস্তাব দেন। ওই ঘটনার পর মেয়েটি রায়হানের সঙ্গে ফোনে কথা বলা বন্ধ করে দেন। এরপর গ্রাম থেকে নিয়ামতপুর উপজেলা সদরে কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেটের জন্য যাওয়া-আসার পথে রায়হান তাঁর পথ আটকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতেন।

মামলায় বলা হয়েছে, গত রোববার বিকেলে নিয়ামতপুর উপজেলা সদরে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে অটোরিকশায় করে বালাহৈর বাজার এলাকায় পৌঁছালে রায়হান ও তাঁর সঙ্গে আরও তিন যুবক তাঁকে বালাহৈর বাজারে রায়হানের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যান। ওই বাড়িতে আটকে রেখে বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত রায়হান ও তাঁর বন্ধুরা ওই তরুণীর আপত্তিকর ছবি তোলেন। পরে ওই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ওই তরুণীকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চাপ দেওয়া হয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁরা ওই তরুণীর মাথার চুল কেটে নেন। একসময় বিষয়টি জানাজানি হলে বালাহৈর বাজারের লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হলে রায়হান ও তাঁর বন্ধুরা মেয়েটিকে ছেড়ে দেন এবং ওই তরুণী খারাপ চরিত্রের বলে প্রচার করতে শুরু করেন।

পরে স্থানীয় লোকজন মেয়েটিকে নিয়ামতপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। খবর পেয়ে রোববার রাতে মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনেরা। ওই তরুণীর মুখে ঘটনা শোনার পর তাঁর বাবা রায়হান ও অজ্ঞাতনামা দুই যুবকের বিরুদ্ধে সোমবার সকালে নিয়ামতপুর থানায় মামলা করেন। দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে রায়হানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওই বখাটেরা আমার মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এখন পর্যন্ত একজন গ্রেপ্তার হলেও আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা

ওই তরুণী বর্তমানে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই তরুণীর বাবা অভিযোগ করেন, ‘ওই বখাটেরা আমার মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এখন পর্যন্ত একজন গ্রেপ্তার হলেও আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আমার মেয়ের আপত্তিকর ছবি রয়েছে তাদের মুঠোফোনে। যেকোনো মূহূর্তে তারা সেসব ছবি ছড়িয়ে দিতে পারে। তখন আমাদের সমাজে মুখ দেখানোর উপায় থাকবে না।’

এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন এবং দণ্ডবিধির দুটি ধারায় মামলা করেছেন। ইতিমধ্যে মামলার প্রধান আসামি রায়হানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে নওগাঁ কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলায় অভিযুক্ত অজ্ঞাতনামা দুই যুবকের পরিচয়ও পাওয়া গেছে। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।