Thank you for trying Sticky AMP!!

আট দিন পর মাথা ও পা উদ্ধার

কালভার্টের নিচ থেকে লাশের একটি পা উদ্ধার করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। সোমবার মাগুরা সদরের ঘোড়ানাসে

মাগুরায় এক যুবকের মাথাবিহীন লাশের খণ্ডিতাংশ উদ্ধারের আট দিন পর ওই লাশের খণ্ডিত একটি পা ও মাথা উদ্ধার করেছে র‍্যাব। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মাগুরা সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের ঘোড়ানাস গ্রামের একটি কালভার্টের নিচ থেকে খণ্ডিত পা–টি উদ্ধার করা হয়। পরে এরই ২০–৩০ ফুট দূরত্বের মধ্যে রাত ৯টার দিকে মাথাটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকেই পুলিশের পাশাপাশি মামলাটি ছায়া তদন্ত করছিল র‍্যাব-৬।

এর আগে ৬ জুন সকালে জেলার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কালুকান্দি গ্রামের একটি রাস্তার পাশে ও মজা পুকুর থেকে দুটি বস্তায় মোড়ানো অবস্থায় দেহের খণ্ডিত দুটি অংশ উদ্ধার করা হয়। র‍্যাব জানিয়েছে, হত্যার সঙ্গে জড়িত এক যুবককে আটকের পর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খণ্ডিত একটি পা ও মাথা উদ্ধার করা হয়েছে।

Also Read: মাগুরায় যুবকের মাথাবিহীন খণ্ডিত লাশ উদ্ধার

মাথাবিহীন লাশটি মো. আজিজুর রহমান (৩০) নামের এক যুবকের বলে দাবি করে তাঁর পরিবার। র‍্যাবও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। নিহত আজিজুরের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার সংকোচখালী গ্রামে। তবে তিনি মহম্মদপুর উপজেলার বানিয়াবহু গ্রামে নানা আবুল কাশেমের বাড়িতে থেকে বড় হয়েছেন। ওই যুবক মাগুরা সদর উপজেলার ইছাখাদা গ্রামে বিয়ে করেন। সবশেষ ওই গ্রামেই একটি ভাড়া বাড়ি থেকে ৫ জুন বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তিনি। পরদিন সকালে তাঁর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ৬ জুন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মহম্মদপুর থানায় হত্যা ও লাশ গুমের মামলা করেন নিহত যুবকের ভাই মো. হাবিবুর রহমান।

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মাগুরা সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের ঘোড়ানাস গ্রামের একটি কালভার্টের নিচ থেকে খণ্ডিত পা–টি উদ্ধার করা হয়। পরে এরই ২০–৩০ ফুট দূরত্বের মধ্যে রাত ৯টার দিকে মাথাটি উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব–৬–এর কর্মকর্তারা জানান, সোমবার দুপুরে যশোরের শার্শা থেকে মো. আশরাফ আলী (৩৩) নামের এক যুবককে আটক করেছে র‍্যাব-৬। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা তিনি স্বীকার করেছে। তাঁরই দেওয়া তথ্য অনুসারে চাউলিয়া ইউনিয়নের ঘোড়ানাস গ্রামের মাসুদ ব্রিকস নামের একটি কালভার্টের নিচ থেকে খণ্ডিত লাশের একটি পা উদ্ধার করেন র‍্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পরে দেড় ঘণ্টা বাদে এরই ২০–৩০ ফুট দূরত্বের মধ্যে মাথাটি উদ্ধার করা হয়।

Also Read: ৪ দিন আগের লাশের মাথা উদ্ধার হয়নি, মেলেনি ২ বছর আগের মাথাও

র‍্যাব কর্মকর্তাদের ভাষ্য, আশরাফ স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, এমএলএম ব্যবসার কমিশনের মাত্র আড়াই হাজার টাকার ভাগ নিয়ে বিরোধ থেকে আজিজুরকে খুন করেন তিনি। তিনি মাগুরা সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের মালিগ্রামের আহমেদ আলী বিশ্বাসের ছেলে। ওই যুবক পারলা বেলতায় হিজামা অ্যান্ড হোমিও সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন। সেখানেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

কালভার্টের নিচ থেকে লাশের পা ও মাথা উদ্ধার করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। সোমবার মাগুরা সদরের ঘোড়ানাসে

র‍্যাব-৬-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রওশনুল ফিরোজ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফ জানিয়েছেন, হিজামা ও হোমিওপ্যাথি ওষুধের ব্যবসা থেকে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আজিজুরের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজিজুরের কাছ থেকে ২১ হাজার টাকার পণ্যের তিনটি প্যাকেজ কেনেন তিনি। এর বিনিময়ে আশরাফকে তিন হাজার টাকা কমিশন দেওয়ার কথা ছিল আজিজুরের। তবে ৩ হাজার টাকার জায়গায় মাত্র ৫০০ টাকা দেন আজিজুর।

Also Read: ৩৬ ঘণ্টায়ও উদ্ধার হয়নি লাশের বাকি অংশ, থানায় মামলা

লেফটেন্যান্ট কর্নেল রওশনুল ফিরোজ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানতে পেরেছেন, ৫ জুন দুপুরে পারলা বেলতলা নিজের হোমিওপ্যাথির চেম্বারে আজিজুরকে খুন করেন আশরাফ। প্রথমে একটি আঘাতের পর আজিজুর অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর ছুরি দিয়ে লাশ টুকরা টুকরা করা হয়। একই দিন সন্ধ্যায় লাশের খণ্ডিত অংশ বস্তাবন্দী করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেন আশরাফ। র‍্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত তদন্তে তাঁরা জানতে পেরেছেন, হত্যাকাণ্ডটি একাই ঘটিয়েছেন মো. আশরাফ আলী।