মদনে ৯ মাস আগে ট্রলারডুবিতে প্রাণহানির ঘটনায় ট্রলারমালিক গ্রেপ্তার

মদনে ট্রলারডুবির ৯ মাস পর ট্রলারটির মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার মদনের রাজালিকান্দা হাওরে ট্রলারডুবির ৯ মাস পর দুর্ঘটনাকবলিত ট্রলারটির মালিক মো. লাহুত মিয়াকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে উচিতপুর ট্রলারঘাট থেকে মদন থানা-পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া লাহুত মিয়া মদনের কুলিহাটি গ্রামের নুরুল হকের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট ময়মনসিংহের কোনাপাড়া এলাকায় মারকাসুন্না হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্রদের ৪৮ জনের দল মদনের উচিতপুর ট্রলারঘাটে আসে। সেখান থেকে তারা দুপুর ১২টার দিকে ‘ভাই ভাই ট্রলার’ নামের একটি ট্রলার ভাড়া নিয়ে হাওর ভ্রমণে বের হয়। ১৫ মিনিট পর ট্রলারটি রাজালিকান্দা হাওরে পৌঁছার পর তা ডুবে যায়। এতে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজন শিশু ছিল, তাদের বয়স ৭ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। ঘটনার পরদিন ট্রলার দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রধান করা হয়েছিল মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদকে।

ঘটনার এক সপ্তাহ পর ওই পর্যটকবাহী ভাই ভাই ট্রলারের নামে নৌ আদালত ঢাকায় মামলা হয়। মামলায় ট্রলারের মালিক লাহুত মিয়া ও দুই মাঝিকে আসামি করা হয়। এর ৯ মাস পর গতকাল রাত ১২টার দিকে পুলিশ লাহুত মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আকস্মিকভাবে হাওরে বাতাস প্রবাহিত হয়। এ সময় প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি উল্টে যায়। ট্রলারটিতে কোনো ধরনের সুরক্ষাসামগ্রী ছিল না। যাত্রীদের মধ্যে যাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক ও সাঁতার জানতেন, তাঁরা যদি আতঙ্কিত না হয়ে সাঁতার কাটতেন; তাহলে হয়তো অনেকই বেঁচে যেতেন। ছাদে থাকা যাত্রীদের অনেকে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে তীরে ওঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে অর্ধেক ডুবন্ত ট্রলারটিতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ভেতরে থাকা যাত্রীরাও দ্রুত বের হয়ে একে অপরকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করেন। এভাবে ১৮ জন মারা যান।

ঘটনার এক সপ্তাহ পর ওই পর্যটকবাহী ভাই ভাই ট্রলারের নামে নৌ আদালত ঢাকায় মামলা হয়। মামলায় ট্রলারের মালিক লাহুত মিয়া ও দুই মাঝিকে আসামি করা হয়। ঘটনার ৯ মাস পর গতকাল রাত ১২টার দিকে পুলিশ লাহুত মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

এ ব্যাপারে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম মামলার আসামি লাহুত মিয়াকে আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর কথা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, অন্য দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।