Thank you for trying Sticky AMP!!

রায় ঘিরে আদালতপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় আজ, নিরাপত্তা জোরদার

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় আজ বুধবার ঘোষণা করবেন আদালত। রায় ঘিরে আদালতপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মামলার বিচারক ইতিমধ্যে আদালতে এসেছেন।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকাসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিচারকাজ গত ১৬ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এদিন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখ ধার্য করেন।

আজ সকাল ৭টার দিকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যদের নিরাপত্তায় আদালত ভবনে আসেন মামলার বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।

শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে

বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের তল্লাশি করে আদালত ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।

বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ভূবন চন্দ্র হালদার বলেন, ‘রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ের দিকে গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছে। প্রত্যেক আসামির সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে আমরা আশাবাদী।’

রায় ঘিরে মঙ্গলবার রাত থেকেই বরগুনার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে পুলিশ। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) টহল জোরদার করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রায়কে কেন্দ্র করে চারটি স্থানে পুলিশি তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। স্থানগুলো হলো—বরগুনা মহিলা কলেজ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের, হাসপাতাল সড়ক, সার্কিট হাউস সড়ক।

চেকপোস্টগুলোতে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যরা সন্দেহজনক যানবাহন তল্লাশির পাশাপাশি জনসাধারণের গতিবিধির ওপর নজর রাখছেন।

রায় ঘিরে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) মহরম আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘রায় ঘিরে বরগুনায় আমরা ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বিশেষ করে আদালত প্রাঙ্গণে থাকবে আমাদের কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। সরকারি গাড়ি ছাড়া কোনো যানবাহন আদালত প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবে না।’

রিফাত শরীফ

রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন—রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আঁকন, মোহাইমিনুল ইসলাম, রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, আয়শা সিদ্দিকা, রাফিউল ইসলাম, মো. সাগর ও কামরুল ইসলাম সাইমুন। তাঁদের মধ্যে আয়শা সিদ্দিকা জামিনে আছেন। আর মো. মুসা পলাতক।

এই মামলায় গত ১ সেপ্টেম্বর প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের আলাদা করে পৃথক আদালতে দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক আসামি ১০ জন, অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন। অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের বিচারকাজ আলাদাভাবে চলছে বরগুনার শিশু আদালতে।

গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে তাঁর স্ত্রী আয়শার সামনে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। এরপর তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেদিন বিকেলে তিনি মারা যান।

রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা

পরদিন ২৭ জুন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রধান সাক্ষী করা হয় আয়শাকে। পরে অভিযোগপত্রে ৭ নম্বর আসামি হিসেবে নাম আসে তাঁর।

গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ৮ জানুয়ারি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে ৭৬ জন সাক্ষ্য দেন। এরপর দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেন আদালত।