শাল্লার সেই নৌ–অ্যাম্বুলেন্সটি হাওরের পানি থেকে উদ্ধার

সুনামগঞ্জের শাল্লায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি শুরু থেকেই অকেজো পড়ে ছিল। বন্যার পানিতে তা এক সময় ডুবে যায়
ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় হাওরের পানিতে ডুবে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সেই নৌ–অ্যাম্বুলেন্সটি অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন এটিকে সচল করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

হাওর–অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের দুর্গম শাল্লা ও জামালগঞ্জ উপজেলার মানুষের জরুরি স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দুটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুরু থেকেই অ্যাম্বুলেন্স দুটি অকেজো। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। শাল্লার অ্যাম্বুলেন্সটি ছিল উপজেলা সদরের ঘুঙ্গিয়ারগাঁও এলাকার হাওরপাড়ে। আর জামালগঞ্জ উপজেলার অ্যাম্বুলেন্সটি এখনো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে উপজেলা সদরের সুরমা নদীর ঘাটে। এসব অ্যাম্বুলেন্সের একেকটির দাম ২৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

সম্প্রতি বন্যায় শাল্লা উপজেলার অ্যাম্বুলেন্সটি হাওরের পানিতে ডুবে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এটি উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান। এরপর প্রথম দিকে চেষ্টা করেও সেটি উদ্ধার করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোতে ১ জুন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ১৫ দিন পানিতে ডুবে থাকার পর এখন এটি তুলে এনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঘাটে রাখা হয়েছে।

শাল্লা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দীপু রঞ্জন দাস বলেন, ‘এটি হাওরবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার। আমরা একাধিকবার পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা চাই, অ্যাম্বুলেন্সটি দ্রুত সংস্কার করে যেন সেবা কার্যক্রম চালু করা হয়। বর্ষায় এটি শাল্লার মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজন।’

শাল্লা উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার দুর্গম উপজেলা হচ্ছে শাল্লা। এখনো জেলা সদরের সঙ্গে এই উপজেলার সরাসরি সড়কপথে যোগাযোগ স্থাপিত হয়নি। বর্ষায় নৌকাই চলাচলের একমাত্র ভরসা। এ সময় জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে জেলা সদরে আসতে হলে প্রথমে নৌকায় করে দিরাই উপজেলায় যেতে হয়। এরপর সেখান থেকে অন্য যানবাহনে জেলা সদর কিংবা সিলেটে যেতে হয়।

শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সেলিনা জাহান বলেন, পানিতে ডুবে যাওয়া নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি তোলা হয়েছে। এটির প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য এর আগেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। নতুন করে আবারও চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল্লাহ আল বেরুনী খান প্রথম আলোকে বলেন, শাল্লা ও জামালগঞ্জ উপজেলায় দেওয়া দুটি অ্যাম্বুলেন্স শুরু থেকেই অকেজো। একাধিকবার এগুলো সংস্কারের জন্য অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এগুলো আবার সচল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।