Thank you for trying Sticky AMP!!

‘স্বামী হত্যার বিচার তো পাচ্ছিই না, উল্টো ছেলে হত্যার হুমকি পাচ্ছি’

হত্যার বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। রোববার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবে

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় আজ রোববার সংবাদ সম্মেলন করে এক ব্যক্তির হত্যার বিচার দাবি করা হয়েছে। এতে মামলার এক আসামি জামিনে বের হয়ে বাদী, সাক্ষীসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

ওই ব্যবসায়ীর নাম মজিবুর রহমান খান (৫২)। তিনি বাসাইল ইউনিয়নের উত্তর বাসাইল এলাকার বাসিন্দা। তিনি বেকারির ব্যবসা করতেন। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবে তাঁর পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে। এতে তাঁর ছেলে মো. আরিফ হোসেন ও স্ত্রী লিজা বেগম বক্তব্য দেন।

লিজা বেগম বলেন, ‘চার বছর ধরে মামলা চালাচ্ছি। মামলা চালাতে গিয়ে দুটি জমি, বেকারির ব্যবসা বিক্রি করে এখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। স্বামী হত্যার বিচার তো পাচ্ছিই না, উল্টো ছেলেদের হত্যার হুমকি পাচ্ছি।’ তিনি পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও আসামিদের ফাঁসির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির সুদৃষ্টি কামনা করেন।

২০১৭ সালের ৪ জুন মজিবুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে সিরাজদিখান থানায় মামলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৪-১৫ বছর আগে মজিবুর বাসাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আইয়ুব খানের ভাতিজা নুর মোহাম্মদ খানকে (৩২) তাঁদের বাড়িতে ঘর করে থাকতে দেন। ২০১৭ সালে নূর মোহাম্মদকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন মজিবুর। এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়। ওই বছরের ৪ জুন বেলা তিনটার দিকে আইয়ুবের নির্দেশে নূর মোহাম্মদ ও তাঁদের স্বজন পাকিজ খান কুপিয়ে মজিবুরকে হত্যা করেন। এরপর তিনজনকে আসামি করে সিরাজদিখান থানায় মামলা হয়।

আরিফ হোসেন বলেন, ‘মামলাটির তদন্তভার ছিল সে সময়ে সিরাজদিখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন মিয়ার ওপর। তিনি তদন্ত শেষে জানান, এজাহারের তিনজনের নামই অভিযোগপত্রে আছে। ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে পুলিশ মামলার ২ নম্বর আসামি পাকিজ খান ও ৩ নম্বর আইয়ুব খানের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়।’

আরিফ আরও বলেন, ‘আমরা আদালতে নারাজি দিলে অধিকতর তদন্তের জন্য ২০১৮ সালের প্রথম দিকে মামলাটি পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়। ডিবিও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অভিযোগপত্র থেকে ওই দুই আসামির নাম বাদ দেয়। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি মামলাটি তদন্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দেওয়া হয়। পিবিআই পাকিজ খানকে বাদ দিয়ে নূর মোহাম্মদ ও আইয়ুবের নামে অভিযোগপত্র দেয়।’

মামলাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। স্থানীয় একটি রাজনৈতিক শক্তি তাঁকে হেয় করার জন্য এই মামলায় জড়িয়েছে। তিনি কোনো সাক্ষী কিংবা বাদীকে হুমকি দেননি।
আইয়ুব খান, মামলার আসামি

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, নূর মোহাম্মদ এখন জেলে আছেন। আইয়ুব জামিন নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন। আইয়ুব ও তাঁর লোকজন বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তাঁরা মামলার সাক্ষী ও বাদীর পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। এ ঘটনায় সম্প্রতি সিরাজদিখান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলেও পুলিশ নিচ্ছে না।

জানতে চাইলে আইয়ুব খান বলেন, মামলাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ঘটনার দিন তিনি সিরাজদিখান ছিলেন না। স্থানীয় একটি রাজনৈতিক শক্তি তাঁকে হেয় করার জন্য এই মামলায় জড়িয়েছে। এতে তিনি দুই মাস জেলও খেটেছেন। তিনি কোনো সাক্ষী কিংবা বাদীকে হুমকি দেননি।

সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জালাল উদ্দীন বলেন, তিনি থানায় নতুন এসেছেন। ঘটনাটি তাঁর জানা নেই। ভুক্তভোগীরা তাঁর কাছে এলে প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা দেওয়া হবে।