
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ১০০ দিন পেরিয়েছে গত শনিবার। এর মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এদিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে মৌনমিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলসংলগ্ন পুকুরপাড় থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি সব একাডেমিক ভবন প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে যায়। সেখানে সমাবেশ হয়। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, খেলাফত ছাত্র মজলিশ, জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়াসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, সাজিদ হত্যার ১০০ দিন পেরোলেও দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সিআইডি বারবার সময় নিচ্ছে। অতি দ্রুত খুনিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে হবে। সাজিদের বিচার না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা রাজপথে থাকবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
এদিকে গতকাল বিকেলে সাজিদ হত্যাকাণ্ডের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে পর্যালোচনা বৈঠক হয়। বৈঠকে সিআইডির পক্ষ থেকে দুই সপ্তাহ পরপর তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে ব্রিফিং করা এবং তদন্তের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ যে কাউকে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক শাহীনুজ্জামান।
সাজিদ আবদুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ১৭ জুলাই সন্ধ্যা ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলের সামনের পুকুর থেকে তাঁর ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় তাঁর পরিবার ও সহপাঠীরা অভিযোগ করেন, সাজিদকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে জানা গেছে, তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল।
গত ৪ আগস্ট ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় হত্যা মামলা করেন সাজিদের বাবা আহসান হাবিবুল্লাহ দেলওয়ার। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। মামলাটি প্রথমে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার পুলিশ তদন্ত করলেও পরে সিআইডিতে চলে যায়।