Thank you for trying Sticky AMP!!

চুয়াডাঙ্গায় দুই তরুণ খুনের ঘটনায় মামলা, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাসহ ৩০ জন আসামি

চুয়াডাঙ্গায় খুন হওয়া মামুন অর রশিদ ও সজল আহমেদ

চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার ভালাইপুর বাজারে বন্ধুর মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে খুন হওয়া দুই তরুণ সজল আহমেদ (২৭) ও মামুন অর রশিদের (২৪) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান লাল্টু স্টেডিয়াম মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় এতিমখানা মাদ্রাসা কবরস্থানে পাশাপাশি তাঁদের দাফন করা হয়। এতে কয়রাডাঙ্গা ছাড়াও আশপাশের গ্রামের মানুষ অংশ নেন।

চাঞ্চল্যকর এই জোড়া খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত মামুন অর রশিদের ভাই কয়রাডাঙ্গা গ্রামের স্বপন আলী বাদী হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এতে আলুকদিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেনসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

Also Read: বন্ধুর মাকে অপমান করার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে খুন হলেন দুই তরুণ

মামলায় অন্যদের মধ্যে আলোচিত সেই দোকান কর্মচারী রিয়ন ও ভালাইপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানাও আসামি। সোহেল রানা আলুকদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জোড়া খুনের কারণ, ঘটনায় কে কীভাবে অংশ নিয়েছেন, কার ভূমিকা কী ছিল, তার পুরো তথ্য পুলিশের হাতে চলে এসেছে। ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শিগগিরই আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাব্বুর রহমান জানান, ঘটনার রাতে (মঙ্গলবার) পুলিশের হাতে আটক চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের হুচুকপাড়া গ্রামের মানিক ও মিঠুকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। জোড়া খুনের মামলায় তাঁরা যথাক্রমে ৫ ও ১০ নম্বর আসামি।

এজাহারে যা বলা হয়েছে

মামলার বাদী স্বপন আলী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ২৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার) বেলা দুইটার দিকে ভালাইপুর গ্রামের ছামেনা খাতুন ভালাইপুর বাজারের আশরাফুল বস্ত্রালয়ে কাপড় কিনতে আসেন। এ সময় দোকানের কর্মচারী রিয়নের সঙ্গে দরদাম নিয়ে তাঁর তর্কবিতর্ক হয়। ছামেনার সঙ্গে রিয়ন খারাপ ব্যাবহার করেন এবং দোকান থেকে বের করে দেন। বিষয়টি তিনি বাড়িতে গিয়ে ছেলে টিপু সুলতানকে জানান। টিপু সুলতান তাঁর বন্ধু সজল, পলাশ, রাসেল, জুয়েল, আনিছুর, লিখন, হালিম, টিপু ও বাদীর ভাই মামুনকে নিয়ে ভালাইপুরের ওই কাপড়ের দোকানে আসামির সঙ্গে কথা বলতে আসেন। দোকান কর্মচারী রিয়ন সেখানে না থাকায় রাত আনুমানিক আটটার দিকে সবাই তাঁর (মো. রিয়ন) বাড়িতে যান।

রিয়ন দুপুরের ঘটনার জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করলে তাঁকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে টিপু সুলতানের মায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য ভালাইপুরের দিকে রওনা দেন। ভালাইপুর বাজারের জিনারুল স্টোরের সামনে পৌঁছালে এজাহারভুক্ত আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধ করে। এরপর ছানোয়ার ও সোহেল রানার হুকুমে আসামিরা অতর্কিত হামলা চালান। ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়ি কোপে সজলের পেট ও মামুনের বুক ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়।

Also Read: চুয়াডাঙ্গায় কাপড় কেনা নিয়ে তর্ক থেকে সংঘর্ষ, ২ জনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

স্থানীয় লোকজন ও চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহযোগিতায় আহত ব্যক্তিদের মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসানুর রহমান পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সজল আহমেদকে তাৎক্ষণিক মৃত ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামুন অর রশিদ মারা যান।