পদ্মা সেতুতে চলাচলের জন্য আনা বিলাসবহুল রেলকোচের ‘কন্ডিশনিং’ চলছে সৈয়দপুরে

চীন থেকে আনা কোচ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ওয়াগন শপ ইয়ার্ডে
 ছবি: প্রথম আলো

পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলের জন্য চীন থেকে ১০০টি বিলাসবহুল রেলকোচ আনা হচ্ছে। এর মধ্যে ১০টি কোচ ইতিমধ্যেই সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আনা হয়েছে। সেখানে চীনা প্রকৌশলী ও রেল কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা কোচগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা (কন্ডিশনিং) করছেন। পরীক্ষামূলক চলাচল শেষে দ্রুত এসব কোচ ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুতে রেল চলাচল শুরু হবে চলতি বছরের জুনে। এ জন্য চীন থেকে প্রথম চালানে ১৫টি কোচ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে ১০টি কোচ কন্ডিশনিংয়ের জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পাঠানো হয়েছে। দেশের রেলপথে চলাচল উপযোগী করতে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় কোচগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

আজ মঙ্গলবার সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ওয়াগন শপ ইয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, চীনা প্রকৌশলীরা স্থানীয় শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে কোচগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যস্ত। ১০টি কোচের মধ্যে রয়েছে চারটি শোভন চেয়ার কোচ, দুটি তাপানুকূল (এসি) স্লিপার কোচ, দুটি এসি চেয়ার কোচ ও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য একটি পাওয়ার কার। কোচগুলোর অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা (ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন) বেশ আধুনিক।

আরামদায়ক আসনগুলোতে রয়েছে ফোল্ডিং ব্যবস্থা। আছে ল্যাপটপ ও মোবাইল চার্জ দেওয়ার পয়েন্ট। এ ছাড়া ডিজিটাল মনিটর ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে প্রতিটি কোচে। কোচের টয়লেটগুলোও পরিবেশবান্ধব। হাই কমোড ও লো-কমোডের ব্যবস্থা আছে। কোচগুলো জাতীয় পতাকার আদলে লাল-সবুজে রাঙানো।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে ওই ট্রেনে ভ্রমণ হবে আরামদায়ক। কোচগুলো চীনের সিআরআরসি ট্যাংসন কোম্পানিতে তৈরি। তবে এর অনেক যন্ত্রাংশ জার্মানি ও রোমানিয়া থেকে এসেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এসব কোচের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হবে। এরপর এগুলো হস্তান্তর করা হবে রেলের পরিবহন বিভাগের কাছে। পর্যায়ক্রমে পরবর্তী চালানের কোচগুলো ওই কারখানায় কন্ডিশনিং হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (সিএমই) তাবাসসুম বিনতে ইসলাম বলেন, ‘ডিসেম্বরে চীন থেকে আসা কোচের ১৫টি রেলকোচ আমরা গ্রহণ করি। এর মধ্যে ১০টি কোচ রেলওয়ে কারখানায় কন্ডিশনিং হচ্ছে। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলবে আগামী জুন মাসের মধ্যে। ওই রুটে রেল ভ্রমণে যাত্রীরা আধুনিক সেবা পাবেন, যা নতুন এক অভিজ্ঞতা হবে।’

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখানে চীন থেকে আনা কোচগুলোকে নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। আমাদের হাতে যথেষ্ট সময় আছে। কাজেই এ নিয়ে তেমন কোনো চাপ নেই। খুব শিগগির এসব কোচের ট্রায়াল রান হবে।’