ভিডিও কলে কয়লার মজুত দেখিয়ে প্রতারণা করতেন তাঁরা

গতকাল মঙ্গলবার রাতে খুলনার বটিয়াঘাটার চক্রাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

নিজেদের পরিচয় দিতেন কয়লার ব্যবসায়ী হিসেবে। ভিডিও কলে ক্রেতাদের দেখাতেন, বিশাল জায়গাজুড়ে তাঁদের কয়লার মজুত আছে। সেই মজুত থেকে কার্গোযোগে বিভিন্ন জেলার ক্রেতার কাছে কয়লা পাঠানো হচ্ছে। অন্যের মজুত করে রাখা কয়লা আর কয়লা পরিবহনের চিত্র দেখিয়ে এভাবে বিশ্বাস অর্জন করতেন। তাঁরপর দরদাম ঠিক করে অগ্রিম টাকা নিয়ে মুঠোফোন নম্বর বন্ধ করে দিতেন। দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৬)।

আজ বুধবার সকালে খুলনায় র‍্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র‍্যাব-৬–এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) তারেক আনাম বান্না। তিনি বলেন, বাগেরহাটে আলিফ এন্টারপ্রাইজ, খান জাহান এন্টারপ্রাইজ, আলম এন্টারপ্রাইজসহ বিভিন্ন ভুয়া নাম দিয়ে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে নানা এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতারণা করছিল একটি চক্র। গতকাল মঙ্গলবার রাতে খুলনার বটিয়াঘাটা থানার চক্রাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তারের পর তাঁদের বাগেরহাটের রামপাল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মো. আবদুল আলী ফকির (৫০) ও তাঁর দুই সহযোগী চিতলমারী উপজেলার মো. আরিফ (৪২) ও ঝালকাঠি সদর উপজেলার মো. হারুন হাওলাদার (৬২)।

তারেক আনাম বান্না বলেন, এই চক্রের প্রধান আবদুল আলী ফকির। তাঁর নামে বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। দীর্ঘদিন ধরে ভিন্ন ভিন্ন ছদ্মনাম ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি। দুই সহযোগীকে নিয়ে আবদুল আলী ভিন্ন ভিন্ন নাম দিয়ে ভুয়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দেখিয়ে বাগেরহাট, খুলনা, যশোর, শরীয়তপুর, নোয়াখালী, পিরোজপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছে কয়লা বিক্রির কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

র‍্যাব জানিয়েছে, আবদুল আলী নিজেকে এসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পরিচয় দিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়াও নিতেন। সেখানে তাঁরা অফিস দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন। টাকা দিয়ে প্রতারিত হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা ওই অফিসগুলোতে গিয়ে পরে আর কোনো অস্তিত্ব পেতেন না। এভাবে চক্রটি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গতকাল রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ দুপুরে বাগেরহাটের রামপাল থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।