
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ দুজনকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় এক ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর দুটি ইউনিটের পরীক্ষার উত্তরপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া চ্যাটজিপিটি (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহার করে পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে আরেক পরীক্ষার্থীর ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র বাতিল ও পরবর্তী সময়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষে সাভারের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এসি ল্যান্ড) আবদুল্লাহ আল আমিন আটক তিনজনকে এ শাস্তি দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম। তিনি জানান, ভর্তি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ দুজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁদের উত্তরপত্র বাতিল করার জন্য নিজ নিজ অনুষদের ডিনের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রক্টর কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দণ্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী এহসানুল হক, ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী রাফি হোসেন ও সাদিয়া আমির। তাঁদের মধ্যে প্রক্সি দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এহসানুল হককে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী (যাঁর পক্ষ থেকে এহসানুল হক পরীক্ষা দেন) রাফি হোসেনকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড ও ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত কলা ও মানবিকী অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিট ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটে তাঁর ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে পরীক্ষা দেওয়ায় সাদিয়া আমিরের ‘সি’ ইউনিট ও ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র বাতিল এবং পরবর্তী সময়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল দলের সদস্যদের সূত্রে জানা গেছে, আজ ‘বি’ ইউনিটের তৃতীয় পালার পরীক্ষা চলাকালে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী রাফি হোসেনের হয়ে জাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রে প্রক্সি দিচ্ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী এহসানুল হক। এ সময় ওই কক্ষের দায়িত্বরত পরিদর্শক বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রক্টরিয়াল দলকে খবর দেন এবং তাঁকে আটক করেন। পরে এহসানুল হকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ক্যাম্পাসের মাঠে অপেক্ষারত ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী রাফি হোসেনকেও আটক করা হয়। এ ছাড়া একই ইউনিটে দ্বিতীয় পালায় মুঠোফোনে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে পরীক্ষা দেওয়ার সময় সাদিয়া আমির নামের আরেক শিক্ষার্থীকে আটক করে প্রক্টরিয়াল দল। এরপর বিকেলে ক্যাম্পাসে আসেন সাভারের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এসি ল্যান্ড) আবদুল্লাহ আল আমিন। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে তাঁদের শাস্তি দেন এবং কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করেন।