
মোটরসাইকেল নিয়ে নতুন নতুন জায়গায় ঘুরে বেড়ানো ছিল তরুণ জয় রাজ দাশের (২২) শখ। তিনি ‘রাঙ্গুনিয়া বাইক লাভার্স’ নামের বাইকারদের একটি সংগঠনের সদস্য। কয়েক বছর ধরে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। দুর্ঘটনা এড়াতে মোটরসাইকেল চালানোর সময় সতর্ক করতেন বন্ধুদের। কিন্তু সেই মোটরসাইকেলই কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ।
গতকাল শুক্রবার দুপুরের দিকে বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলা সদরের কাছাকাছি থানচি-বান্দরবান সড়কে পণ্যবাহী ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন জয়। তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রাত একটার দিকে নিজ বাড়িতে তাঁর শেষকৃত্য হয়েছে।
জয় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের মহাজন বটতল এলাকার অমল দাশের ছেলে। তিনি কাপ্তাইয়ের বাংলাদেশ-সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অটোমোবাইল শাখার তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
জয়ের বন্ধু ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাঙ্গুনিয়া থেকে আটটি মোটরসাইকেলে আট তরুণ বান্দরবানে বেড়াতে যান। বেলা দুইটার দিকে বান্দরবান শহর থেকে থানচি উপজেলা সদরের কাছাকাছি পৌঁছানোর পর তাঁদের মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলটি দুমড়েমুচড়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় জয় রাজ দাশকে উদ্ধার করে থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। কৃষিপণ্যবোঝাই ট্রাকটি থানচি থেকে বান্দরবান শহরের দিকে যাচ্ছিল।
জয়ের মৃত্যুর খবরে ফেসবুকে বন্ধু ও স্বজনেরা শোক জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। তাতে জানা যাচ্ছে, সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন জয়। তাঁর অকালে চলে যাওয়া কিছুতেই মানতে পারছেন না সংগঠনের সদস্যরা। রাঙ্গুনিয়া বাইক লাভার্স গ্রুপের ‘অ্যাডমিন’ ও জয়ের বন্ধু আদনান ফাহিম ফেসবুকে লেখেন, ‘তোর বিদায়টা এভাবে দিতে হবে জানা ছিল না। কখনো কোনো আবদার করলি না, সব সময় বলতি ভাইয়া কোথাও আটকে গেলে আপনি ভরসা হিসেবে আছেন তো। কিন্তু আরও ভরসা রাখতে পারতি আমাদের ওপর, একা কেন চলে গেলি ভাই।’ এই পোস্টের নিচে তাঁর বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শোকের মন্তব্য দীর্ঘ হচ্ছে।