সরকারি পুকুরে অবৈধভাবে জাল ফেলে মাছ ধরা হচ্ছে। আজ শনিবার সকালে জামালপুর শহরের ফুলবাড়িয়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয় প্রাঙ্গণে
সরকারি পুকুরে অবৈধভাবে জাল ফেলে মাছ ধরা হচ্ছে। আজ শনিবার সকালে জামালপুর শহরের ফুলবাড়িয়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয় প্রাঙ্গণে

জামালপুরে সরকারি পুকুরের মাছ ধরে নিলেন বিএনপি নেতা

জামালপুরে সরকারি একটি পুকুরের মাছ ধরে নিয়ে গেছেন বিএনপির এক নেতা। আজ শনিবার ভোরে শহরের ফুলবাড়িয়া এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যালয় প্রাঙ্গণের পুকুর থেকে মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার এ ঘটনা ঘটে।

ওই নেতার নাম এস এম আপেল মাহমুদ। তিনি জামালপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি শহরের ফুলবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা।

পাউবোর জামালপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ ভোরে আপেল মাহমুদ জেলেসহ ১০ থেকে ১২ জন লোক নিয়ে এসে পাউবোর পুকুরে জাল দিয়ে মাছ ধরতে শুরু করেন। খবর পেয়ে পাউবোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পুকুর পাড়ে গিয়ে তাঁকে মাছ ধরতে নিষেধ করেন। কিন্তু ওই নেতা তাঁদের (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) বিভিন্নভাবে শাসান। পরে পাউবোর কর্মকর্তারা ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই ওই নেতা মাছ ধরে নিয়ে যান।

ঘটনাস্থলে যাওয়া জামালপুর সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. আশরাফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা গিয়ে দেখেন মাছ ধরা শেষ। জাল ভ্যানে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখন ভ্যান থেকে তাঁরা জাল নামান। পরে পাউবোর কয়েকজন কর্মকর্তার সম্মতিতে জাল ফেরত দেওয়া হয়। পাউবোর পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঈদের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাউবোর জামালপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিন মাস আগে পুকুরে মাছের পোনা ছাড়া হয়েছিল। মাছ তেমন একটা বড়ও হয়নি। হঠাৎ সকালে অফিস থেকে জানানো হয়, আপেল নামের ওই ব্যক্তি পুকুরে জাল ফেলে মাছ ধরছেন। পরে উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন পুকুর পাড়ে যান। কিন্তু এর আগেই তাঁরা মাছ ধরে নিয়ে গেছেন। তখন পুকুর পাড়ে ওই নেতা ও তাঁর লোকজন ছিলেন। তিনি (আপেল) শফিকুল ইসলামকে নানাভাবে হুমকিও দেন। তিনি বলেন, বিষয়টি তাঁরা বিএনপির জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতাকে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এস এম আপেল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই জায়গায় আমি মাছ ছাড়ছি। সরকারি পুকুরে আমি মাছ অবমুক্ত করছি। মাছ ধরা ও ছাড়া নিয়ে তো কোনো সমস্যা নেই। আপনি (প্রতিবেদক) আমাকে ফোন করছেন কেন?’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, বিএনপির দু–একজন কর্মীর অপকর্মের দায় বিএনপি নেবে না। অপকর্মের দায় তাঁকেই বহন করতে হবে।

আপেল মাহমুদকে অব্যাহতি

মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার পর এস এম আপেল মাহমুদকে দলের সব কর্মকাণ্ড থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যার আগে জামালপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. তরুণ হাসান (কাজল) ও সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসেনের (শুভ) স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে তাঁকে দলীয় সব কর্মকাণ্ড থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হলো।