
কুষ্টিয়া, সুনামগঞ্জ ও চট্টগ্রামের তিন সংসদীয় আসনে বিএনপি–মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা। কুষ্টিয়ার কুমারখালী, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় এসব বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। কর্মসূচি থেকে মনোনীত প্রার্থীদের পরিবর্তন করে তাঁদের পছন্দের নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর মনোনয়ন পরিবর্তন চেয়ে মশালমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম আনছার প্রামাণিকের সমর্থকেরা। তাঁরা আনছারকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
তৃণমূল বিএনপির ব্যানারে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালী কাজীপাড়া মোড় থেকে কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। পরে বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন গোলচত্বর এলাকায় প্রায় আধা ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। এ সময় আনছার প্রামাণিককে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে নানা স্লোগান দেওয়া হয়।
কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল করিম বিশ্বাস বলেন, ‘মেহেদীকে পরিবর্তন করে আনছারকে মনোনয়ন না দিলে এই আসনে ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করা সম্ভব হবে না। এখানে রুমী সাহেব থাকলে জামায়াত জিতে যাবে। সে জন্য তাঁকে পরিবর্তন করে আনছারকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে আমরা নিয়মিত বিক্ষোভ ও মশালমিছিল চালিয়ে যাচ্ছি।’
৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীকে এখানে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এর পর থেকেই আনছার প্রামাণিকের সমর্থকেরা বিক্ষোভ মিছিল, মশালমিছিল, মানববন্ধন, সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি করে আসছেন।
এদিকে সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যবাজার) আসনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুল হকের মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামানের অনুসারী নেতা-কর্মীরা।
আজ বিকেলে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে এ সমাবেশের আয়োজন করে বাদাঘাট ও উত্তর বড়দল ইউনিয়ন বিএনপি। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান, বাদাঘাট ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মো. মনজুর আলী, উত্তর বড়দল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. এনাম উদ্দিন তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য দেন। তাঁরা প্রার্থী পুনর্বিবেচনা করে কামরুজ্জামানকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।
মনোনয়নপ্রত্যাশী কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমি সব সময় নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলাম। গত ১৬ বছর মামলা, নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছি। তবু মাঠ ছাড়িনি।’ মনোনয়ন প্রসঙ্গে বলেন, ‘তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা আমাকে এখানে প্রার্থী চান। দল থেকেই বলা হয়েছে, এটি চূড়ান্ত মনোনয়ন নয়। তাই মানুষের ভালোবাসা অনেক কিছু বদলে দিতে পারে।’
এদিকে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রাম সিটি আংশিক) আসনে বিএনপির প্রার্থী কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মনোনয়ন বাতিল করে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আসলাম চৌধুরীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর সমর্থকেরা। আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় নগরের কর্নেল হাট এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি সিটি গেট হয়ে এ কে খান মোড় ঘুরে আবার কর্নেল হাটে গিয়ে শেষ হয়।
উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক রফিক উদ্দিন ও সদস্যসচিব মো. সেলিমের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলে হাজারো নেতা-কর্মী অংশ নেন। এ সময় আসলাম চৌধুরীর পক্ষে নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া ও সুনামগঞ্জ এবং প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম]