
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা জীবনের ভয় করি না সেই গত বছরের জুলাই মাস থেকে। রাজপথে নেমেছি নতুন বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার জন্য। সেই নতুন দেশ প্রতিষ্ঠার আগপর্যন্ত আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজবাড়ী শহরে এনসিপির পথসভায় এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। এর আগে এনসিপির মাসব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিকেল পাঁচটার দিকে রাজবাড়ী শহরের বড়পুল এলাকায় পৌঁছান এনসিপির নেতারা। এরপর রাজবাড়ী শহরের ১ নম্বর রেলগেটে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের সামনে পথসভায় যোগ দিতে পদযাত্রা শুরু করেন তাঁরা।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৫ আগস্টের পরই বলে দিয়েছি, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। এটা তো একটা সন্ত্রাসের সংগঠন অবশ্যই। তার থেকে বড় বিষয় ফ্যাসিস্ট মতাদর্শ। এই আদর্শকেও পরাস্ত করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘জুলাই পদযাত্রার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য জেলায় জেলায়, এলাকায় এলাকায় আপনাদের সমস্যাগুলো খুঁজে বের করা এবং তা সমাধানের পথ বের করা। আপনাদের সমস্যা সমাধানের রাজনীতি আমরা করতে চাই।’
বিকেল সাড়ে পাঁচটায় শুরু হওয়া পথসভায় নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি সবার আগে সমস্যা খুঁজে বের করতে হবে। যদি আমরা সমস্যা না জানি, তাহলে সমাধান করব কীভাবে? আমরা তাই সারা দিনই সমস্যা খুঁজে আগে বের করছি।’
পথসভায় দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ঢাকায় বসে বসে কিছু জ্ঞানপাপী, বুদ্ধিপাপী ঢাকায় মিডিয়ায় বসে বসে গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ আমাদের ওপর যে হামলা করেছে, সেটার বৈধতা উৎপাদন করেছে।’
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা বলেন, ‘রাজবাড়ী জেলায় কোনো ভালো হাসপাতাল নেই। আমি সদর হাসপাতালে গিয়েছিলাম, সেখানে দেখেছি রোগীদের কত ভোগান্তি হয়। সেখানে ফ্যাসিলিটি ভালো নেই, অনেক অব্যবস্থাপনা আছে।’ তিনি বলেন, ‘বড় কিছু হলেই রোগীদের যেতে হয় ফরিদপুর। কারও যদি হার্ট অ্যাটাক হয়, স্ট্রোক হয়, এখানে কোনো চিকিৎসা নেই। চিকিৎসা করতে দূরের হাসপাতালে যেতে পথেই মানুষ মারা যায়। এই আমাদের ৫৪ বছরের বাংলাদেশে এই স্বাস্থ্যব্যবস্থা চাই না। আমরা চাই বাংলাদেশে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু হোক। দেশটা যাতে সুন্দর হয়, দেশটা যাতে সব নাগরিকের হয়। এটা করার জন্য আমরা মাঠে নেমেছি।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লার সভাপতিত্বে পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। এ সময় সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীর উদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইয়েদ জামিলসহ বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে এনসিপির নেতা-কর্মীরা ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে পারে না’, ‘দিয়েছি তো রক্ত আরও দেব রক্ত’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি, আজাদি’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুজিববাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।