
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষ, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টায় ১৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত বুধবার দুপুর থেকে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত জেলার পাঁচটি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সবাইকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জেলার পাঁচটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) হিসাব অনুযায়ী, গোপালগঞ্জ সদর থানায় ৪৫ জন, কোটালীপাড়ায় ১২ জন, টুঙ্গিপাড়ায় ১৭ জন, কাশিয়ানীতে ২৪ এবং মুকসুদপুর থানায় ৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কাশিয়ানী থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, কাশিয়ানী থানার সাম্পান হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের সামনের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ৭০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কোটালীপাড়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা পৃথক মামলায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ।
টুঙ্গিপাড়া থানায় গ্রেপ্তার ১৭ জনকে দণ্ডবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি খোরশেদ আলম। মুকসুদপুরেও আটক ৬৬ জনকে একই ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের খাটিয়াগড় চরপাড়ায় পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সদর থানায় গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানসহ ৭৫ জনের উল্লেখ একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলা এবং ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মোট ৪৫ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সদর থানার ওসি মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার এনসিপির সভাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ শহরে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মুহাম্মদ সরোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বুধবারের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে। পুলিশের পৃথক ১০টি দলের এ অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি শহরের মধ্যে চারটি স্থানে বিশেষ তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করা হচ্ছে।