বেঁচে থাকতে কেউ তাঁকে বলতেন বইপাগল। শিশুরা ডেকেছে বইদাদু। যে নামেই ডাকা হোক, বইপ্রেমী পলান সরকারের জন্মই হয়েছিল জ্ঞানের আলো ছড়ানোর জন্য। তাঁর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী আজ ১ আগস্ট। ১৯২১ সালের এই দিনে তিনি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নূরপুর মালঞ্চী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
পলান সরকারের জন্মদিন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রথম আলোর রাজশাহী কার্যালয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান ও তাঁর ওপরে প্রথম আলো নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়েছে।
পলান সরকারের কেতাবি নাম হারেজ উদ্দিন। কিন্তু তিনি পলান সরকার নামেই পরিচিতি পান। নিজের টাকায় বই কিনে পাঠকের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে বই পড়ার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য ২০১১ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন। ২০০৭ সালে সরকারিভাবে তাঁর বাড়ির আঙিনায় একটি পাঠাগার করে দেওয়া হয়।
২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘ইমপ্যাক্ট জার্নালিজম ডে’ উপলক্ষে প্যারিসভিত্তিক একটি সংগঠন ‘স্পার্ক নিউজ’ ইতিবাচক উদ্যোগের ওপর লেখা আহ্বান করে। বাংলাদেশ থেকে প্রথম আলো ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ শিরোনামে পলান সরকারের বই পড়ার আন্দোলন নিয়ে লেখা পাঠায়। ২০ সেপ্টেম্বর লেখাটি সারা পৃথিবীর ৪০টি প্রধান দৈনিকে ছাপা হয়। এর মধ্যে ১০টি পত্রিকার প্রধান শিরোনাম হয় ‘আলোর ফেরিওয়ালা’।
প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২০১৪ সালে পলান সরকারকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়। ২০০৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তাঁকে নিয়ে প্রথম আলোর সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘ছুটির দিনে’ প্রচ্ছদ প্রতিবেদন ছাপা হয় ‘বিনি পয়সায় বই বিলাই’। এটিই তাঁকে নিয়ে প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রথম প্রতিবেদন। এর আগে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। ২০১৯ সালের ১ মার্চ না ফেরার দেশে চলে যান পলান সরকার।