
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গোসলের একপর্যায়ে স্রোতের টানে ভেসে গিয়ে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার বেলা দুইটার দিকে সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটেছে। মৃত দুজন হলেন রাজশাহীর শাহিনুর রহমান (৫৮) ও তাঁর ছেলে সিফাত রহমান (২০)।
এর আগে গতকাল রোববার বিকেলে লাবণী পয়েন্টে গোসলে নেমে চট্টগ্রামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। শনিবার সৈকতের শৈবাল পয়েন্টে মাছ ধরতে গিয়ে এক পর্যটক ও স্থানীয় এক বাসিন্দা ভেসে যান। পরে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেন লাইফগার্ডের কর্মীরা।
এদিকে পুলিশ ও লাইফগার্ডের কর্মীরা জানান, গত দুই দিনে সমুদ্রের বিভিন্ন পয়েন্টে গোসলে নেমে তিন পর্যটকসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
কলাতলী সৈকতে পর্যটকদের উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থা ‘সি সেফ লাইফগার্ড স্টেশন’–এর লাইফগার্ড মোহাম্মদ শুক্কুর জানান, কয়েক দিন ধরে বঙ্গোপসাগর উত্তাল। বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে সাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে একাধিক গর্তের (গুপ্তখাল) সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্রের পানিতে উল্টো স্রোতের টানও বেশি দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় গুপ্তখাল সৃষ্টি হওয়াটা বেশ ঝুঁকির। সৈকতে গোসলে নামতে নিষেধ করে লাইফগার্ড আওতাভুক্ত এলাকায় একাধিক নিশানা টাঙানো হয়েছে। কিন্তু লাইফগার্ডের আওতার বাইরে আজ দুপুরে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
লাইফগার্ডের কর্মীরা জানান, আজ বেলা পৌনে দুইটার দিকে বাবা-ছেলে দুজন হোটেল সায়মান বিচ রিসোর্টের সামনে সৈকতে গোসলে নামেন। সেখানে লাল নিশানা টাঙানো ছিল। কিছুক্ষণ পর ঢেউয়ের ধাক্কায় বাবা-ছেলে ভেসে যেতে থাকেন। এ সময় সাঁতার কেটেও তাঁরা তীরের দিকে ফিরতে পারেননি। একপর্যায়ে তাঁরা স্রোতের টানে গুপ্তখালে আটকা পড়েন। ওই সময় লাইফগার্ডের কর্মীরা দ্রুতগতির জলযান ‘জেটস্কি’ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। সেখান থেকে তাঁদের মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
লাইফগার্ডের কর্মী আবদুল শুক্কুর বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পর বাবা-ছেলে রক্তবমি করেন। সম্ভবত ঢেউয়ের ধাক্কায় তাঁরা আঘাত পেয়েছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সমুদ্রের বিপজ্জনক পয়েন্টে গোসলে নেমে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে একাধিক গুপ্তখাল আছে বলে জানা গেছে। মরদেহ দুটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাঁদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। গতকাল তাঁরা রাজশাহী থেকে সপরিবার কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন।