Thank you for trying Sticky AMP!!

গিয়েছিলেন অপদস্থ হয়ে, ফিরলেন ফুলের মালা নিয়ে

নড়াইলের মির্জাপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে কলেজের প্রধান ফটকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়

লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার ৪৫ দিন পর কর্মস্থলে ফিরলেন নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি কলেজে যান, থাকেন আড়াইটা পর্যন্ত। তাঁকে কলেজে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা।

তাঁকে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসানো হয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে। কলেজ থেকে বের হয়ে তিনি নিজের বাড়িতে যান। গত ১৮ জুন ঘটনার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। ৩৫ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৪ জুলাই খুলেছে কলেজ। এরপর আজই তিনি কলেজে যান।

তাঁকে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসানো হয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে। কলেজ থেকে বের হয়ে তিনি নিজের বাড়িতে যান। গত ১৮ জুন ঘটনার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। ৩৫ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৪ জুলাই খুলেছে কলেজ। এরপর আজই তিনি কলেজে যান।
অধ্যক্ষকে বরণ করে নিতে সকাল থেকেই কলেজে অপেক্ষা করছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। স্থানীয় সংসদ সদস্য বি এম কবিরুল হকের গাড়িতে বেলা ১১টা ৪৭ মিনিটে কলেজে আসেন অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস। এ সময়ে তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোসসহ রাজনৈতিক দলের নেতারা।

কলেজের প্রধান ফটকে তাঁকে গলায় ফুলের মালা পরিয়ে স্বাগত জানান কলেজের শিক্ষকেরা। এরপর ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেন কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী। এরপর শিক্ষার্থীরা ফুলের মালা পরিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম জানায় তাঁকে। তাঁকে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসিয়ে দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদলের কর্মকর্তা, স্থানীয় সংসদ সদস্য বি এম কবিরুল হক, কলেজে পরিচালনা পরিষদের কর্মকর্তা ও উপস্থিত অন্যরা।

Also Read: নড়াইলের সেই কলেজ খুলেছে, যাননি লাঞ্ছিত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার

এ সময় অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের সব মানুষের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই। বিশেষভাবে আমি কৃতজ্ঞ সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রতি, যাঁরা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন।’ তিনি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা নিরাপদে, নির্ভয়ে পড়াশোনা করবে। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় প্রকৃত মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির সেবায় এগিয়ে আসবে।’

সহকর্মী শিক্ষকদের উদ্দেশে অধ্যক্ষ বলেন, ‘১৮ জুন আমি আপনাদের রক্ষা করতে পারিনি, নিরাপত্তা দিতে পারিনি। এ জন্য ক্ষমা চাই। আশা করি এখন থেকে সবাই আমাদের পাশে থাকবে। আশা করি এ ধরনের ঘটনা এই কলেজে আর ঘটবে না।’

নড়াইলের মির্জাপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা

এর আগে কলেজে ঢোকার সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘১৮ জুনের ঘটনা ছিল অপ্রত্যাশিত। আজকে কলেজে যে পরিবেশ, সবাই আমাকে যে সম্মান দিয়েছে, আমি আনন্দ উপভোগ করছি। বিগত দিনের সবকিছু আমি ভুলে যেতে চাই। দেশবাসীকে বলব আমার জন্য দুঃখ, কষ্ট না করার জন্য। আমি সবার জন্য কল্যাণ কামনা করি।’

কলেজ সূত্র জানায়, ১৭ জুন নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিজের ফেসবুকে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে প্রণাম জানিয়ে ছবিসহ একটি পোস্ট দেয়। এ নিয়ে পরদিন কলেজে উত্তেজনা তৈরি হলে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার ওই শিক্ষার্থীর বাবাকে ডাকেন। আলোচনা করেন কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে। আলোচনায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী, কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে তাঁদের কাছে সোপর্দ করা হয়।
পুলিশ সদস্যরা ওই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে নিয়ে যেতে চাইলে উত্তেজিত ছাত্র ও বহিরাগত কয়েকজন তাঁদের বাধা দেন। তখন পুলিশ সুপার (এসপি) ও জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিষয়টি জানানো হয়। বিকেল চারটার দিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার ও ওই শিক্ষার্থীকে কলেজের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে বের করা হয়। নিচতলার কলাপসিবল গেটের সামনে আনার পর তাঁদের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে প্রথম আলোর প্রিন্ট ও অনলাইন সংস্করণে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।

Also Read: শিক্ষক লাঞ্ছনা: পেছাল নড়াইলের সেই কলেজ খোলার দিন