Thank you for trying Sticky AMP!!

ওনারা নাকি রপ্তানি করেন, এখন আমরা বিদ্যুৎ পাই না: জোনায়েদ সাকি

ঢাকা থেকে রোডমার্চ শুরুর পর গাজীপুর চৌরাস্তায় আজ দুপুরে প্রথম সমাবেশ করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা

গণতন্ত্র মঞ্চের রোর্ডমার্চ উপলক্ষে গাজীপুরে আয়োজিত সমাবেশে বর্তমান বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেছেন, ‘ওনাদের (সরকার) বিদ্যুতের অবস্থা দেখেন কীভাবে আমরা নাকাল হই। ওনারা নাকি রপ্তানি করেন, এখন আমরা বিদ্যুৎ পাই না। বিদ্যুতের বিল তো আমরা ঠিকই দিই। কিন্তু পায়রাতে (বিদ্যুৎকেন্দ্র) কয়লার যে বিল, সেটি ওনারা শোধ করেন না। ফলে পায়রা বিদ্যুৎ প্রকল্পই বন্ধ করে দিতে হয়।’

আজ রোববার দুপুরে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমান ‘অবৈধ’ সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বিলুপ্তি, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীন জাতীয় নির্বাচন, সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে এই রোডমার্চের ডাক দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে ঢাকা থেকে রোডমার্চ শুরুর পর গাজীপুর চৌরাস্তায় প্রথম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশের রাজপথ দখল করতে হবে। যারা আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়, যারা আমাদের নাগরিক মর্যাদাকে ভুলণ্ঠিত করে তাদেরকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে।’ সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান গণতন্ত্র মঞ্চের এই নেতা বলেন, ‘সারা বাংলাদেশ দখল করে এই স্বৈরাচারেরা, যারা মনে করছে এটা তাদের জমিদারি, ৪১ সাল, শত বছর—কত কিছু তারা ক্ষমতায় থাকবে। এই ক্ষমতা জায়েজ করেছিল কী বলে? উন্নয়ন করছে তারা। উন্নয়ন একেবারে উদাম হয়ে পড়েছে। একেবারে সবকিছু খুলে ফেলেছে।’

Also Read: সমাবেশে বাধা দেওয়ার পরিণতি ভালো হবে না: গণতন্ত্র মঞ্চ

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ওনারা এত দিন ভোট কেড়ে, গুমখুন এবং দমন-পীড়ন করে টিকে ছিলেন। ওই প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বড় কর্মকর্তাদের ওনারা টাকা দিয়েছেন। ঘুষ খেতে দিয়েছেন, চুরি–ডাকাতিসহ যত রকম অন্যায় সব করতে দিয়েছেন। এই ভাগ–বাঁটোয়ারা পেয়ে তারা বিদেশে টাকা জমিয়েছেন। ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা সব ওখানে। এখন মুশকিলে পড়ে গেছেন।’

বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসা নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এতেই সরকারের পায়ের তলার মাটি চলে গেছে। যেই আমলাদের এবং পুলিশের ওপর নির্ভর করে আমার–আপনার ভোট চুরি করেছে, তারা তো তাদের ছেলেমেয়েদের আমেরিকায় পাঠাতে চায়। কাজেই ওনাদের এখন পায়ের তলায় মাটি শেষ। কাকে দিয়ে ভোট কাটাবে। কাদের দিয়ে আমাদের মিছিলে হামলা করাবে, পুলিশ পেছনে না থাকলে আওয়ামী লীগের গুন্ডাপান্ডা দিয়ে হামলা করে পারবে না।’

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, প্রথমে ভিসা নিতে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা বললেন এটা বিএনপির জন্য। এতে কাজ হচ্ছিল না। প্রধানমন্ত্রী অন্তত বুঝতে পারছেন। এ জন্য কালকের সমাবেশে বলে দিয়েছেন, আমেরিকা যাওয়ার দরকার কী। বহু মহাদেশ আছে, ওখানে না গেলেও চলবে।

পুলিশ প্রশাসন আর এই সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে পারবে না উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনার (আমেরিকায়) যাওয়া লাগতে না পারে, কিন্তু বাংলাদেশের বহু মানুষের আমেরিকার সঙ্গে ব্যবসা–বাণিজ্য করতে হয়। হাজার হাজার গার্মেন্টস কর্মীর জীবন-জীবিকা নির্ভর করে আমেরিকা ইউরোপের বাজরের ওপর। আপনার ক্ষমতার জন্য লাখ লাখ শ্রমিকের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী বুঝে ফেলেছেন জনগণ তাকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে ফেলবেন।’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন গাজীপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক আমজাদ হোসেন। এতে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কয়সার প্রমুখ।

ধারাবাহিক আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে ৪ থেকে ৭ জুন পর্যন্ত এই রোডমার্চ করা হবে বলে জানিয়েছেন গণতন্ত্রের মঞ্চের নেতারা। তাঁরা বলছেন, গাজীপুরের পর টাঙ্গাইল, ‌সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও রংপুরে সমাবেশ করা হবে।