ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসবের একটি মুহূর্ত। আজ শনিবার সকালে সিলেট নগরের মেজরটিলা এলাকার স্কলার্সহোম মেজরটিলা কলেজের ক্যাম্পাসে
ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসবের একটি মুহূর্ত। আজ শনিবার সকালে সিলেট নগরের মেজরটিলা এলাকার স্কলার্সহোম মেজরটিলা কলেজের ক্যাম্পাসে

উৎসাহ-উদ্দীপনায় সিলেটে আঞ্চলিক গণিত উৎসব শুরু

পাঁচ দিন ধরে সিলেটে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে আছে কনকনে ঠান্ডা। সেই ঠান্ডা উপেক্ষা করে আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে সিলেট নগরের মেজরটিলা এলাকার স্কলার্সহোম মেজরটিলা কলেজের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব-২০২৫। সিলেটের চারটি জেলার খুদে গণিতবিদেরা তুমুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আঞ্চলিক এ গণিত উৎসবে অংশ নিয়েছে।

জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে গণিত উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন স্কলার্সহোম মেজরটিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফয়জুল হক, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সহসভাপতি ও নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সাবেক উপাচার্য ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পতাকা উত্তোলন করেন সিলেট শাখার উপব্যবস্থাপক ইমরান ইবনে আহাদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিমাদ্রি শেখর চক্রবর্তী, প্রথম আলো সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমনকুমার দাশ প্রমুখ।

মিথ্যা, মুখস্থ ও মাদককে না বলে অঙ্গীকার করে শিক্ষার্থীরা। শনিবার সকালে সিলেট নগরের মেজরটিলা এলাকার স্কলার্সহোম মেজরটিলা কলেজের ক্যাম্পাসে

উৎসবের উদ্বোধন করে স্কলার্সহোম মেজরটিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফয়জুল হক বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গা থেকে তোমরা আজ একত্র হয়েছ একটি মহান লক্ষ্যকে সামনে রেখে। তোমাদের মতো খুদে গণিতবিদেরাই একদিন গণিতবিশারদ হবে। তোমরা হবে জাতির সূর্যসন্তান, আগামীর বাংলাদেশ। পরীক্ষা বড় কিছু নয়, তোমাদের বড় হয়ে ওঠার এটি একটি পথের ধার। তোমাদের ভবিষ্যত আলোকিত হোক।’

শুভেচ্ছা বক্তব্যে ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংক সিলেট শাখার উপব্যবস্থাপক ইমরান ইবনে আহাদ বলেন, ‘গণিত শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নয়, গণিত আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। গণিত উৎসবে অংশগ্রহণ করে তোমরা তোমাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাবে। তোমাদের জন্য শুভকামনা রইল।’

পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে গণিত উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আজ শনিবার সকালে সিলেট নগরের মেজরটিলা এলাকার স্কলার্সহোম মেজরটিলা কলেজের ক্যাম্পাসে

প্রশ্নোত্তর পর্বে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরী, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিমাদ্রী শেখর চক্রবর্তী, সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাগর বিশ্বাস ও দিলীপ চন্দ্র রায় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন।

বাবার সঙ্গে হবিগঞ্জ থেকে প্রথমবারের মতো গণিত উৎসবে অংশ নিয়েছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়মন শাহান। সে বলে, ‘প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়ে অন্য রকম আমেজ কাজ করছে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাচ্ছি।’
পাশে থাকা সায়মনের বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা কামাল মিয়া আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘একটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশে আসতে পেরেছি। সন্তানেরা এর মাধ্যমে আত্মনির্ভরতার পাশপাশি ভবিষ্যতে নিজেকে তৈরি করার মন-মানসিকতা নিয়ে বড় হবে।’

উৎসবে গান পরিবেশন করেন বন্ধুসভার এক সদস্য

সিলেটের আখালিয়া থেকে মা–বাবার সঙ্গে এসেছে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া সাফওয়ানা খান। সে বলে, ‘এখানে উৎসবের মতো লাগছে। আমার মতো দূর থেকেও অনেকে এসেছে, তাদের সঙ্গেও কথা হচ্ছে। আশা করি, পরীক্ষাও ভালো হবে।’

‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লাোগানে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় আঞ্চলিক গণিত উৎসবের এ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। আর আজকের এই আয়োজনে সহযোগিতায় করছে সিলেট বন্ধুসভা, মেট্রোপলিটন বন্ধুসভা ও মুরারিচাঁদ কলেজ বন্ধুসভা। এ উৎসবে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ থেকে হাজারো খুদে গণিতবিদেরা অংশ নিয়েছে।

পরীক্ষায় মগ্ন শিক্ষার্থীরা