Thank you for trying Sticky AMP!!

নারীর লাশ ৭ দিন ঘরে রাখার ঘটনায় স্বামী কারাগারে, যে ধারায় হলো মামলা

কারাগার

নরসিংদীর মনোহরদীতে ‘বেঁচে উঠবে’ বিশ্বাসে শামীমা সুলতানা ওরফে নাজমা (৫৫) নামে এক নারীর লাশ ৭ দিন ঘরে রাখার ঘটনায় তাঁর স্বামী মোক্তার উদ্দীন তালুকদারকে (৬৮) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে নরসিংদীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উন্মুল আমানের আদালতে তোলা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

মোক্তার উদ্দীন তালুকদার মনোহরদী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। গত শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তাঁর বাড়ির গেটের তালা ও ঘরের দরজা ভেঙে খাটের নিচ থেকে তোষকে মোড়ানো ওই নারীর পচে-গলে বিকৃত হয়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় ওই নারীর স্বামী, চার মেয়ে ও তিন নাতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নেওয়া হয়। গতকাল রাতে ওই নারীর স্বামীকে একমাত্র আসামি করে লাশ অবমাননার মামলা করে পুলিশ। পরিবারটি ফরিদপুরের এক পিরের মুরিদ।

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারীর লাশ কবর না দিয়ে সাত দিন ঘরে রেখে পচতে দেওয়া লাশ অবমাননার শামিল। তাই দণ্ডবিধির ২৯৭ ধারায় করা মামলায় ওই নারীর স্বামীকে আসামি করা হয়েছে। পরিবারটির বাকি সদস্যদের চিকিৎসা প্রয়োজন, তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Also Read: বেঁচে উঠবে বিশ্বাসে নারীর লাশ ৭ দিন ঘরে রেখে দেন স্বজনেরা

প্রতিবেশীদের ভাষ্য, কয়েক দিন ধরে বাড়িটি থেকে দুর্গন্ধ আসছিল। দুর্গন্ধের মাত্রা বাড়তে থাকায় এর উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছিল। গত শনিবার বিকেলে পার্শ্ববর্তী বাড়ির শৌচাগার পরিষ্কার করতে গিয়েছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। দুর্গন্ধের চোটে তাঁরা কাজ না করেই ফিরে আসেন। এরপর প্রতিবেশীরা ওই বাড়ির সদস্যদের ডাকাডাকি করলেও তাঁরা সাড়া দিচ্ছিলেন না। বাধ্য হয়ে রাত আটটার দিকে ওই এলাকার বাসিন্দারা জেলা পরিষদের সদস্য ইসরাত জাহানকে বিষয়টি জানান। তিনি থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

পুলিশ বলছে, শনিবার রাত ৯টার দিকে পুলিশ সদস্যরা বাড়িটিতে গেলে তাঁরা গেট খুলছিলেন না, ছাদও ছিল তালাবদ্ধ। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে অনুরোধ শেষে গেটের তালা ভাঙা হয়। এ সময় তাঁরা ঘরের দরজাও ভেতর থেকে বন্ধ করে দিলে তাও ভেঙে ফেলা হয়। পরে ঘরে ঢুকে দেখা যায়, খাটের নিচে তোষকে মোড়ানো নারীর লাশ। তীব্র দুর্গন্ধের মধ্যেই তিন শিশুসহ তাঁরা আটজন সেখানে অবস্থান করছিলেন। গত সোমবার ভোরে জিকিররত অবস্থায় মারা যান শামীমা সুলতানা।

প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িটির সব সদস্যদের আচরণ রহস্যজনক। তাঁরা সব সময় দরজা-জানালা বন্ধ করে বাড়িতে অবস্থান করেন। কারও সঙ্গে দেখা করেন না, কথাও বলেন না। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা পুলিশকে বলেছেন, তাঁদের বিশ্বাস ছিল, লাশ এভাবে ছয় থেকে সাত দিন রেখে দিলে শামীমা জীবিত হয়ে উঠবেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী জলিল মৃধা বলেন, আজ দুপুরে লাশ অবমাননার মামলায় মোক্তার উদ্দিন তালুকদারকে আদালতে তোলা হলে তাঁর জামিনের আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক পরবর্তী সময়ে তাঁর জামিন শুনানি করবেন জানিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।