Thank you for trying Sticky AMP!!

‘এই জাড়ত কম্বল ছাড়া নিন আসে না, অ্যালা শান্তিত ঘুমাবা পারিমো’

নাতিকে সঙ্গে নিয়ে হুইলচেয়ারে প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল নিতে এসেছিলেন মালেকা বেগম। বয়স তাঁর ৯০ ছুঁইছুঁই

পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ায় সমাজসেবা কার্যালয় থেকে পাওয়া হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতে হয় পারপুগী গ্রামের মালেকা বেগমকে। বয়স তাঁর ৯০ বছরের কাছাকাছি। নাতিকে সঙ্গে নিয়ে সেই হুইলচেয়ারে কম্বল নিতে এসেছিলেন তিনি। কম্বল হাতে পেয়ে মালেকা বেগম বলেন, ‘ছয় বছর ধরিয়া এইখান (হুইলচেয়ার) ধরিয়া চলু। শীতত খুবই কষ্ট যাছে। একখান কম্বলেরতানে কতঠে গেনু। কাহ দিলনি। আল্লাহ তোমারলার ভালো করিবে।’

আজ মঙ্গলবার প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় ১৮৫ জন অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। পারপুগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সময় কম্বল পেয়ে মালেকা বেগমের মতো অসহায় প্রবীণেরা স্বস্তি প্রকাশ করেন।

Also Read: ‘এ বছর পথম কম্বল পালাম, ভালুই লাগছে’

এর আগে বন্ধুসভার সদস্যরা গতকাল সোমবার সদর উপজেলার মধ্যপারপুগী, পারপুগী, মহেশপুর, ডাঙ্গীপাড়া গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায় শীতার্ত মানুষের তালিকা তৈরি করেন। পরে ১৩০ জনের হাতে কম্বল বিতরণের স্লিপ তুলে দেওয়া হয়। সেই স্লিপ নিয়ে বিকেলে শীতার্ত ও বয়স্ক নারী-পুরুষেরা পারপুগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কম্বল নিতে হাজির হন। যাঁরা আসতে পারেননি, তাঁদের বাড়িতে কম্বল পৌঁছে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা। এ ছাড়া পৌর শহর ও আশপাশের কয়েকটি এলাকায় ঘুরে ঘুরে ৫৫টি কম্বল বিতরণ করা হয়।

লাঠিতে ভর দিয়ে চলাফেরা করেন অশীতিপর খায়রুন বেগম। গায়ে শাড়ির সঙ্গে একটি ফিনফিনে চাদর। প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে একটি কম্বল হাতে তুলে দিতেই তাঁর আর খুশি ধরে না। তিনি বললেন, ‘মোক কম্বল দেওয়ার কাও নাই। জারের রাইতত কষ্ট পাছিনু। তোমরা কম্বলখান দিয়া খুব উপকার করিলেন। অ্যালা শান্তিত ঘুমাবা পারিমো।’

Also Read: ‘আইতোত কম্বলকোনা গাওত দিয়া আরাম করি নিন পারব্যার পামো’

কম্বল পেয়ে খুশি আরেক অশীতিপর আমিনা বেগম (৮৬) বলেন, ‘হামার ঘরের বাঁশের টাটির (বেড়া) ফুটা দিয়ে বাতাস ঢোকে। বিছানাত শুতি (শুয়ে) থাকিয়াও শান্তি পাও না। এ বছর খুব জাড় পড়িছে। খুব কাহিল হয়া পড়ছিনু। আইজ থাকিয়া আরাম হইবে।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ঠাকুরগাঁওয়ে শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে পারপুগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে

মানুষের সহযোগিতায় কোনোরকমে খেয়ে জীবন চলে হাটখোলা গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা কাইমন বেওয়ার (৭০)। কম্বল পেয়ে তিনি বলেন, ‘তোমরা কী যে উপকার করিলেন, কী কহিমো। এই জাড়ত কম্বল ছাড়া নিন আসে না, অ্যালা শান্তিত ঘুমাবা পারিমো।’

কম্বল বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক নাসরিন জাহান, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষক আনিসুর রহমান, আর কে স্টেট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ফেরদৌসী বেগমসহ বন্ধুসভার সদস্যরা।

Also Read: ‘নরম তুলতুইলা কম্মল পাইনু, তুমরা হামরাকে মেলাই ভালোবাসিছো’

প্রথম আলো ট্রাস্টের এই উদ্যোগে সহযোগিতা করছে ইলেকট্রো মার্ট লিমিটেড (কনকা)। শীতার্ত মানুষের জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টে পাঁচ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই অনুদানের টাকায় কেনা কম্বল অসহায় শীতার্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।

অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।