সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ধরা পড়া ৩৩ কেজি ওজনের কালো পোপা মাছ কাঁধে নিয়ে ছুটছেন ট্রলার ও জালের মালিক আব্দুল গণি। শনিবার সকালে
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ধরা পড়া ৩৩ কেজি ওজনের কালো পোপা মাছ কাঁধে নিয়ে ছুটছেন ট্রলার ও জালের মালিক আব্দুল গণি। শনিবার সকালে

সেন্ট মার্টিনে ধরা পড়ল ৩৩ কেজির কালো পোপা, দাম ৭ লাখ

বঙ্গোপসাগর থেকে বড় মাছ ধরার জন্য বেশ পরিচিতি আছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা আবদুল গণির (৪৪)। কয়েক বছর ধরে তাঁর ট্রলারের জালে বড় বড় লাক্ষা, কোরাল ও পোপা মাছ ধরা পড়েছে। এবার ধরা পড়েছে প্রায় ৩৩ কেজি ওজনের বড় একটি ‘কালো পোপা’।

আজ শনিবার বিকেলে সাগর থেকে কালো পোপা মাছটি কাঁধে নিয়ে আবদুল গণি বাজারে যাচ্ছেন, এমন একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর মাছটি কেনার জন্য মানুষের ভিড় লেগেছে।

পোপা মাছের বায়ুথলি দিয়ে থাইল্যান্ড, হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি হয়। তাই পোপা মাছের দাম বেশি। মাছের পেট কেটে বায়ুথলি বের করে রোদে শুকানো হয়। তারপর বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
মো. দেলোয়ার হোসেন, জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা, টেকনাফ উপজেলা

আবদুল গণি বলেন, আজ ভোরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের দক্ষিণে ছেঁড়াদিয়ার পশ্চিম সাগরে তাঁর মালিকানাধীন একটি ট্রলার থেকে জাল ফেলা হয়। সকাল আটটার দিকে জালে আটকা পড়ে বড় একটি কালো পোপা মাছ। মাছটি কাঁধে তুলে সেন্ট মার্টিন বাজারের ফিশারিতে মেপে ওজন দেখা গেছে ৩২ কেজি ৮০০ গ্রাম। মাছটি কেনার জন্য অনেকে ভিড় করছেন। দাম হাঁকা হচ্ছে সাড়ে ৭ লাখ টাকা। একজন ব্যবসায়ী ৬ লাখ টাকা দিতে চেয়েছেন, কিন্তু ৭ লাখ টাকার কমে তিনি বিক্রি করবেন না।

৩৩ কেজি ওজনের পোপা মাছের দাম ৭ লাখ টাকা কেন—জানতে চাইলে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের মৎস্য ব্যবসায়ী জমির উদ্দিন বলেন, বায়ুথলির কারণেই পোপা মাছের দাম বেশি। একেকটি বায়ুথলির দাম ছয়-সাত লাখ টাকা। এসব দিয়ে দামি ওষুধ ও মূল্যবান সার্জিক্যাল সুতা তৈরি হয়। তবে মাছটি কেটে বিক্রি করলে প্রতি কেজিতে পাওয়া যায় ৭০০-৯০০ টাকা।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, পোপা মাছের বায়ুথলি দিয়ে থাইল্যান্ড, হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি হয়। তাই পোপা মাছের দাম বেশি। মাছের পেট কেটে বায়ুথলি বের করে রোদে শুকানো হয়। তারপর বিদেশে রপ্তানি করা হয়। কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছটায় পোপা মাছের বায়ুথলি রপ্তানির কয়েকটি কারখানা আছে।

আবদুল গণি জানান, সেন্ট মার্টিন পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে প্রবাল ও চুনাপাথরের স্তূপে বিস্তৃত। এখানে বড় বড় পোপা ও লাক্ষা মাছ পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণ সাগরে জাল ফেলে তাঁর জালে ধরা পড়েছিল ৬০ কেজি ওজনের দুটি কালো পোপা মাছ। মাছ দুটি তখন বিক্রি হয়েছিল ৮ লাখ টাকায়।

এর আগে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর আবদুল গণির জালে ধরা পড়েছিল ৩৪ কেজি ওজনের আরেকটি বড় পোপা মাছ। মাছটি বিক্রি করেছিলেন ৮ লাখ টাকায়। ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ১২টি লাল ও কালো পোপা ধরা পড়েছিল গণির জালে। সব কটির ওজন ছিল ৩০ থেকে ৪০ কেজির মধ্যে।