Thank you for trying Sticky AMP!!

স্ত্রীকে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যেতে সহায়তায় করায় ভায়রাকে হত্যা

পিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার বাবুল মিয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে অটোরিকশাচালক সাদ্দাম হোসেন (৩০) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তাঁর ভায়রা বাবুল মিয়া (৪০) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল সোমবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আলমের আদালতে ১৬৪ ধারায় বাবুল এই জবানবন্দি দেন। এতে তিনি সাদ্দাম হোসেনকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতকে হত্যার কারণ জানিয়েছেন।

সোমবার রাতে জেলা শহরের ভাদুঘর এলাকায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শচীন চাকমা বিষয়টি জানিয়েছেন। গত শুক্রবার সকাল ১০টায় নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের আশরাফপুর গ্রাম থেকে সাদ্দামের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সাদ্দামের ভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে নবীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন। ঘটনাটি তদন্ত শুরু করে জেলা পিবিআই। লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কিছু সূত্রের ভিত্তিতে সাদ্দামের ভায়রা বাবুলকে নরসিংদীর শিবপুরের ইটাখোলা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআইয়ের সদস্যরা।

Also Read: শিবগঞ্জে নারী আনসার সদস্য হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে পরকীয়া: দাবি পুলিশের

বাবুল পিবিআইয়ের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দামকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন।

বাবুল জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রীকে কাদেরের সঙ্গে পালিয়ে যেতে তাঁর শ্যালিকা ও ভায়রা সাদ্দাম সহায়তা করেছেন।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পিবিআই পুলিশ সুপার শচীন চাকমা বলেন, বাবুল নেত্রকোনা উপজেলা সদরের খায়ের বাংলা মধ্যপাড়ার বাসিন্দা। প্রায় ১০ বছর আগে প্রেম করে তিনি বিয়ে করেন। তাঁদের সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। কাদের মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে ভাই বানিয়ে বাবুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন তাঁর স্ত্রী। নরসিংদীতে কাজ করলে ভালো টাকা পাবেন বলে বাবুলকে প্রলোভন দেখান কাদের। গত বছরের এপ্রিলে নরসিংদীর শিবপুর থানার ইটাখোলা বাজারের পাশে নিজের বাসার কাছাকাছি বাবুলকে একটি ভাড়া বাসা ঠিক করে দেন কাদের। এই সুযোগে বাবুলের স্ত্রীর সঙ্গে কাদেরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

Also Read: ‘পরকীয়া’র জেরে মেয়েকে ‘হত্যা’র অভিযোগে মা গ্রেপ্তার

নিহত অটোরিকশাচালক সাদ্দাম হোসেন

একপর্যায়ে দাম্পত্য কলহের জেরে বাবুলের স্ত্রী তাঁর বাবার বাড়ি নবীনগর উপজেলার দৌলতপুরে চলে যান। সেখানে কাদেরের সঙ্গে তিনি সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকেন। ভায়রা সাদ্দামসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিষয়টি বাবুলকে জানান। গত ১৫-২০ দিন আগে শ্যালিকার (সাদ্দামের স্ত্রী) মাধ্যমে বাবুল জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রী বাবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে কাদেরের সঙ্গে ঘরসংসার করছেন। পরে বাবুল জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রীকে কাদেরের সঙ্গে পালিয়ে যেতে তাঁর শ্যালিকা ও ভায়রা সাদ্দাম সহায়তা করেছেন। বাবুল স্ত্রীর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন ধরেন কাদের। বাবুলের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী আর সংসার করবেন না বলে জানান কাদের। এই পরিস্থিতিতে প্রতিশোধ নিতে ভায়রা সাদ্দামকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বাবুল।

Also Read: স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের বদলা নিতে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

বাবুল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, ১৮ জানুয়ারি বিকেলে ঘরে কাপড় শুকানোর চার-পাঁচ হাত রশি পকেটে নিয়ে নরসিংদীর ইটাখোলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর হয়ে নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর বাজারে যান তিনি। এরপর রাতে সাদ্দামকে ফোন দিয়ে ডেকে আনেন। সাদ্দামের অটোরিকশায় করে দুজন উপজেলার আশরাফপুরে যান। পরে হাঁটতে হাঁটতে দৌলতপুর বিলের পারের দিকে যান। পরিকল্পনামতো একটি নির্জন জায়গায় গিয়ে সিগারেট ধরান দুজন। সাদ্দাম বসে ও বাবুল দাঁড়িয়ে সিগারেট খাওয়ার একপর্যায়ে পকেটে থাকা রশি দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে সাদ্দামকে হত্যা করেন বাবুল। এরপর ঘটনাস্থলে সাদ্দামের লাশ ফেলে পালিয়ে যান।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শচীন চাকমা বলেন, মামলাটি পিবিআই নিজ উদ্যোগে তদন্ত করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Also Read: প্রেম থেকে বিয়ে, অতঃপর পরকীয়া সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় স্ত্রীকে খুন