লালপুরের গোসাইপুর-মিল্কিপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম জিল্লুর রহমানকে ফুলসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে করে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে মোটরসাইকেল বহর দিয়ে তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেলে
লালপুরের গোসাইপুর-মিল্কিপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম জিল্লুর রহমানকে ফুলসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে করে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে মোটরসাইকেল বহর দিয়ে তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেলে

৪০ বছর ইমামতির পর ফুলসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে ইমামের রাজকীয় বিদায়

নাটোরের লালপুরে ৪০ বছর ইমামতি করার পর ফুলে ফুলে সজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে একটি মসজিদের ইমামকে রাজকীয়ভাবে বিদায় দেওয়া হয়েছে। লালপুরের গোসাইপুর-মিল্কিপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম জিল্লুর রহমানকে গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর ফুলসজ্জিত গাড়িতে করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। এ সময় গ্রামের নারী-পুরুষের কান্নায় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।

৭০ বছর বয়সী ইমাম জিল্লুর রহমান উপজেলার আড়বাব গ্রামের সোবহান মোল্লার ছেলে। তিনি ১৯৮৫ সাল থেকে টানা ৪০ বছর ধরে গোসাইপুর-মিল্কিপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বার্ধক্যজনিত কারণে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তাঁর সম্মানে এ ব্যতিক্রমী বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এলাকাবাসী।

মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে ফুলসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে করে তাঁকে আড়বাব গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেই গাড়ির পেছনে ছিল গ্রামের যুবকদের মোটরসাইকেলের বহর। গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ ইমামকে বিদায় জানাতে রাস্তার দুই পাশে ভিড় করেন।

বিদায়ের সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে সালাম বিনিময় করছেন ইমাম জিল্লুর রহমান

গোসাইপুর-মিল্কিপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইমাম সাহেব ছিলেন আমাদের অভিভাবকতুল্য। তিনি শুধু ইমামতি করেননি; আমাদের জীবনের নানা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর দীর্ঘ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আমরা এমন সম্মাননা দিয়েছি।’

বিদায়ের পূর্বমুহূর্তে আবেগজড়িত কণ্ঠে ইমাম জিল্লুর রহমান বলেন, ‘জীবনের বড় একটি অংশ এই মসজিদ আর গ্রামের মানুষের মাঝে কেটেছে। আমি সারা জীবন দ্বীনের খেদমতে নিয়োজিত ছিলাম। মানুষ আমাকে এত ভালোবাসে আগে বুঝিনি। আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাই, তিনি আমাকে এমন সম্মান দিয়েছেন। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’

গোসাইপুর-মিল্কিপাড়া গ্রামে এর আগে কখনো এভাবে কোনো ইমামকে বিদায় নিতে দেখা যায়নি বলে জানান স্থানীয় লোকজন। মসজিদের ইমামের প্রতি মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।