তাওসিফ রহমান
তাওসিফ রহমান

রাজশাহীতে বিচারকের ছেলের মৃত্যু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে: ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসক

রাজশাহীতে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবদুর রহমানের ছেলের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসক বলেছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে এই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধানসহ দুই সদস্যের একটি চিকিৎসক দল মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

চিকিৎসকেরা বলছেন, ধারালো ও চোখা অস্ত্রের আঘাতে তাওসিফ রহমানের (১৬) শরীরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রক্তনালি কেটে গেছে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। এতেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন।

আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত শুরু হয়। ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক কফিল উদ্দিন ও একই বিভাগের প্রভাষক শারমিন সোবহান কাবেরী। ময়নাতদন্ত করতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগে।

এ সময় বাইরে অপেক্ষা করছিলেন তাওসিফের বাবা বিচারক আবদুর রহমান। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক কফিল উদ্দিন বেরিয়ে এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। এ ছাড়া পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন।

হামলার ঘটনায় আহত বিচারকের স্ত্রী তাসনিম নাহারকে অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

চিকিৎসক জানান, তাওসিফের ডান ঊরু, ডান পা ও বাঁ বাহুতে ধারালো ও চোখা অস্ত্রের আঘাত পাওয়া গেছে। এই তিনটি জায়গায় রক্তনালি আছে। সেগুলো কেটে গিয়েছিল। এ কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণও ছিল শরীরে।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে তাওসিফের গলায় কালশিরা দাগ আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। গতকাল পুলিশ বলেছিল, শ্বাসরোধ করে তাওসিফকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁদের ধারণা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলেছেন, নরম কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধের কারণে এ দাগটি হতে পারে। তবে এটি মৃত্যুর প্রধান কারণ নয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা একই সময়ে হয়েছে বলেও জানান ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী নগরের ডাবতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় খুন হয় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাওসিফ। হামলাকারী লিমন মিয়া (৩৫) তাদের পূর্বপরিচিত। তাঁর হামলায় জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাওসিফের মা তাসমিন নাহার (৪৪)। এ ছাড়া ধস্তাধস্তিতে হামলাকারী লিমন আহত হয়ে হাসপাতালে পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।

তাওসিফের মরদেহ দাফনের জন্য জামালপুরে গ্রামের বাড়ি নেওয়া হচ্ছে। লাশের গোসল ও জামালপুরে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে আছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।