
ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) শাখা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত ৯ সদস্যের একটি কমিটির তালিকা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে ওই কমিটি গঠনের প্রতিবাদে গতকাল রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি একটি খসড়া কমিটি ছিল। আপাতত সেটি স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির নামে সহিংসতা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সিট বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম হয়েছে। তাঁরা চুয়েটে এ ধরনের পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ও রাজনীতির মাধ্যমে ক্যাম্পাসে অপরাধের সংস্কৃতি আবার ফিরিয়ে আনতে চান না। ক্যাম্পাস সম্পূর্ণ রাজনীতিমুক্ত দেখতে চান। এখানে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম মেনে নেওয়া হবে না।
শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালের ৭ আগস্ট চুয়েটের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য রাজনৈতিক সংগঠনে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ করে। এর পরও ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার লঙ্ঘন। তাঁরা ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের দাবি জানান এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া তালিকা অনুযায়ী, ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটির সভাপতি তড়িৎকৌশল বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিফ রাশেদ এবং সাধারণ সম্পাদক জৈব চিকিৎসা প্রকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ তৌফিক হাসান চৌধুরী। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন, সহসভাপতি চন্দন কুমার দাশ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌসিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান আল সাবিত ও সাখাওয়াত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব হোসাইন এবং প্রচার সম্পাদক আহমেদ ইনতিসার।
তবে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, এটি একটি খসড়া কমিটি ছিল। আপাতত সেটি স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। রাজনীতি–নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে কমিটি দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে। সে জায়গা থেকে আমরা মনে করি যে কেউ যেকোনো সংগঠনের রাজনীতি করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলেই এভাবে রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে পারে না।’