ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় গণসমাবেশে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। সোমবার বিকেলে মুন্সিরহাট হাই স্কুলমাঠে
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় গণসমাবেশে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। সোমবার বিকেলে মুন্সিরহাট হাই স্কুলমাঠে

আগামী নির্বাচনে ইসলামপ্রেমীদের একটি ব্যালট বাক্সের জন্য এক হওয়ার আহ্বান চরমোনাইর পীরের

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাইর পীর) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘আমি সারা বাংলাদেশ ঘুরে দেখেছি, এখন কিন্তু যেনতেনভাবে দিনকে রাত, রাতকে দিন বানানোর সুযোগ আর নেই। এখন বাংলাদেশের মানুষ সজাগ। হে চাঁদাবাজেরা, খুনিরা, স্টেশন দখলকারীরা বাংলাদেশের মানুষকে ধোঁকা দিয়ে গর্তে ফেলানোর সুযোগ আর তোমরা পাবে না।’

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা মুন্সিরহাট হাইস্কুল মাঠে আজ সোমবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেজাউল করীম এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনে মো. জিল্লুর রহমানের হাতে হাতপাখা তুলে দিয়ে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন।

ইসলামের পক্ষে সবাই এক হলে দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আসবে বলে দাবি করে রেজাউল করীম বলেন, ‘আমরা যদি একাকার হই ইসলামের পক্ষে, দেশের কল্যাণের পক্ষে ও মানুষের কল্যাণের পক্ষে আওয়াজ তুলতে পারি, তাহলে এ দেশ হবে তামাম দুনিয়ার মধ্যে স্বর্ণের দেশ। আর যদি চাঁদাবাজ ও ধোঁকাবাজদের ধোঁকায় আবার পড়ি, তাহলে আমাদের চোখের পানি, মায়ের কলিজা ছিঁড়া চিৎকার বিফলে যাবে। আমার ব্যবসায়ী ভাইয়েরা সুন্দরভাবে ব্যবসা করতে পারব না, এই পরিবেশ আর দেখতে চাই না। তাই আসুন, আমরা যাঁরা ইসলামপ্রেমী রয়েছি, দেশপ্রেমী রয়েছি সবাই এক হয়ে দেশের কল্যাণের জন্য ও মানুষের কল্যাণের জন্য আগামী নির্বাচনে যদি একটি ব্যালট বাক্স পাঠাতে পারি, তাহলে আল্লাহর রহমতে বিজয় আমাদের ঠিকই দান করবে।’  

সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম জানান, দেশে নীতি আদর্শবানদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা গত ৫৩ বছরে ছিল না। তাঁর ভাষ্য, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন করতে গিয়ে লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছিল, পঙ্গু হয়েছিল। মা সন্তানকে হারিয়েছিল। সেই স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল বিশ্বসাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। কিন্তু যাঁরা ৫৩ বছর দেশ পরিচালনা করেছেন, এঁদের মাধ্যমে এই তিনটার দেখা মেলেনি। ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘আমরা স্বাধীন হয়েছি ঠিক, কিন্তু পরাধীনতায় আমাদের এই ৫৩ বছরের জীবন কাটিয়েছি।’

গণসমাবেশে উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফী, মাওলানা নুরুল করিম আকরাম প্রমুখ।

চরমোনাইর পীর রেজাউল করীম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নীতি আদর্শের শাসন আমল আমরা দেখেছি, কিন্তু ইসলামী নীতি আদর্শের শাসন আমরা দেখিনি। তবে একটু দেখেছি ২০২৪ সালে। যখন দেশে অভ্যুত্থান হলো, তখন আপনারা দেখেছেন যাঁরা ইসলামী নীতি আদর্শ লালন করেন, তাঁরা সংখ্যালঘুদের জানমাল ও উপাসনলায়গুলো সংরক্ষণে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করেছেন। তখন আমরা রাস্তায় নেমেছিলাম, যখন রাস্তায় ট্রাফিক ছিল না, মানুষের কষ্ট লাঘবে ট্রাফিক সিগন্যালে দায়িত্ব পালন করেছি। তখন আমরা দেখেছি একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল ব্যস্ত হয়ে গেছে চাঁদাবাজিতে, লুটতরাজের জন্য, স্টেশন ও হাট দখলের জন্য। ওরা ভাগ–বাঁটোয়ারা নিয়ে শত শত নেতা–কর্মী নিজেরা নিজেদের মেরে ফেলেছে। আমরা দেখেছি, ওদের কেন্দ্রীয় নেতা পর্যন্ত ওদের কাছে নিরাপদ নয়। এই অবস্থা কি আমরা দেখতে চাই?’