সাফল্যের আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে মুখর হয়ে উঠল গাইবান্ধার ইনডোর স্টেডিয়াম। আজ শনিবার সকালে সেখানে অনুষ্ঠিত হলো শিখো-প্রথম আলো জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা। এ আয়োজনে অংশ নেয় ৯৫০ জন শিক্ষার্থী।
সকাল নয়টায় শিক্ষার্থীদের আসার কথা থাকলেও সাড়ে আটটা থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে। নিবন্ধনের পর বন্ধুসভার সদস্যরা শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট, নাশতা ও উপহারের ব্যাগ তুলে দেন। সকাল পৌনে দশটার মধ্যেই মিলনায়তন ভর্তি হয়ে যায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকে।
ঠিক সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এ সময় কণ্ঠ মেলায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। রাজধানীর উত্তরায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিন ‘ম’—মাদক, মিথ্যা ও মুখস্থকে না বলার শপথবাক্য পাঠ করান প্রথম আলোর সাবেক সহসম্পাদক ও শিক্ষক আলমগীর খন্দকার।
গাইবান্ধা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. শামছুল হক বলেন, ‘আমাদের সমাজে ভালো মানুষের অভাব রয়েছে। তোমাদের সুশৃঙ্খল ও নৈতিক হতে হবে। প্রশাসনিক বড় কর্মকর্তা হওয়ার আগে ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করবে।’
রোকেয়া পদক প্রতিযোগিতায় ‘সফল জননী’ ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ হওয়া রাবেয়া খাতুন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের মায়েরা অনেক কষ্ট করে এই পর্যায়ে এনেছেন। মাঝপথে থেমে যেও না। মায়ের মুখ উজ্জ্বল করা মানেই দেশের মুখ উজ্জ্বল করা।
সাংবাদিক আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ বলেন, এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া কেবল শুরু। এইচএসসিতেও যেন জিপিএ-৫ পাও, সেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। যারা জিপিএ-৫ পায়নি, তাদের ভুলে যেও না। বড় হয়েও বুকের ভেতরে বাংলাদেশটাকে রেখো।
শিখোর ম্যাথ মেন্টর সৌরভ সাহা বলেন, এখন অনলাইনের যুগে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সেরা শিক্ষকের ক্লাস পাওয়া সম্ভব। প্রয়োজন শুধু ইচ্ছাশক্তি ও আত্মবিশ্বাস।
কৃতী শিক্ষার্থী মো. মুসতাকিম বলেন, আজকের এই সংবর্ধনার মাধ্যমে জিপিএ-৫ পাওয়ার আনন্দটা পূর্ণতা পেল।
তাসনিম সুলতানা বলেন, ‘এই সংবর্ধনা আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করেছে। পড়াশোনায় মনোযোগী হতে সহায়তা করবে।’
অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর প্রতিনিধি শাহাবুল শাহীন সম্পাদক মতিউর রহমানের লেখা চিঠি পড়ে শোনান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গাইবান্ধা বন্ধুসভার সহসভাপতি মেহেদী হাসান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসী।
সাংস্কৃতিক পর্বে গান পরিবেশন করেন গাইবান্ধা বন্ধুসভার উপদেষ্টা নিগার নাঈম ও জিয়াউর রহমান, স্বজন খন্দকার এবং কৃতী শিক্ষার্থী সিনহা কবির, মেঘা ও নিরব আহমেদ। গান পরিবেশনের সময় নেচেগেয়ে আনন্দে মেতে ওঠে শিক্ষার্থীরা। সবশেষে কুইজ বিজয়ী ১০ জনের হাতে বই তুলে দেন অতিথিরা।
আয়োজনটির পাওয়ার্ড বাই অংশীদার ছিল কনকা-গ্রি। সহযোগিতায় ছিল কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, কোয়ালিটি গ্রুপ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, আকিজ টেলিকম লিমিটেড, আম্বার আইটি লিমিটেড, এটিএন বাংলা এবং প্রথম আলো বন্ধুসভা।