সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে দুই শিশুসন্তানসহ বিষপান করেন রত্না বেগম (২৮) নামের এক গৃহবধূ। পরে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে দুই সন্তানকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। অন্যদিকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বুধবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া দুই শিশুর নাম আরিয়ান (৫) ও ছয় মাস বয়সী মাহির আবরার। তারা কালিকাপুর গ্রামের শেখ মাহমুদুল হাসানের ছেলে। দুই শিশুর মা রত্নাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মারা যাওয়া শিশুদের চাচা আরিফুল ইসলাম জানান, আজ দুপুরের দিকে দুই সন্তানকে নিয়ে ঘরে ছিলেন তাঁর ভাবি রত্না বেগম। একপর্যায়ে কীটনাশকের গন্ধ পেয়ে ভেতর থেকে আটকানো ঘরের দরজা খুলতে বলেন স্বজনেরা। তবে দীর্ঘক্ষণ কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তিনজনকে খাটের ওপর সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে পাশের শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই শিশুসন্তানকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে দুই সন্তানসহ ভাবি কীটনাশক পান করতে পারেন। এ ঘটনার পর দুই ছেলেকে হারিয়ে তাঁর ভাই পাগলের মতো আচরণ করছেন। আমগাছে দেওয়ার জন্য ঘরে কীটনাশক রেখেছিলেন। ভাবি সেই কীটনাশক দুই সন্তানকে পান করিয়ে নিজেও পান করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে আরিফুলের প্রতিবেশী ফজর আলী বলেন, রত্না তাঁর স্বামী মাহমুদুল হাসানের পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ করতেন। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত। ওই মনোমালিন্যের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁরা ধারণা করছেন।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দুই শিশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর জানান, ঘটনাটি কালীগঞ্জ থানা এলাকার। বিষয়টি তাঁরা দেখছেন। কালীগঞ্জ থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি।