Thank you for trying Sticky AMP!!

গাজীপুরে আওয়ামী লীগের মূল্যায়ন সভায় দুই পক্ষের চেয়ার–ছোড়াছুড়ি, আহত ৬

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বোর্ডবাজার এলাকায় এক কনভেনশন সেন্টারে আওয়ামী লীগের মূল্যয়ন সভা হয়। সোমবার দুপুরে

গাজীপুর মহানগরের গাছা থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আজ সোমবার সকালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনপরবর্তী মূল্যায়ন সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় এক কর্মীর বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সেখানে লোহার চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন।

সভায় সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লা খানও উপস্থিত ছিলেন। গতকাল রোববার তিনি গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন বোর্ডবাজার এলাকায় মোল্লা কনভেনশন সেন্টারে বেলা সোয়া ১১টায় এ সভা শুরু হয়। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আজমত উল্লা খান পরাজিত হওয়ার পর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের থানা ও ওয়ার্ড কমিটির সদস্যদের নিয়ে গত ৩১ মে থেকে এ ধরনের মূল্যায়ন সভা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা বলেন, সভার শুরুতে বক্তব্য দেওয়ার জন্য স্থানীয় এক নেতার নাম ডাকা হয়। তখন অপর একটি পক্ষ তাঁকে কেন ডাকা হলো—বলে হইচই শুরু করে। উত্তেজনার একপর্যায়ে ওই কনভেনশন সেন্টারে থাকা লোহার চেয়ার তাঁরা একে অপরের দিকে ছুড়তে থাকেন। পরে সেখানে থাকা নেতারা ও পুলিশ তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করে পরিস্থিতি শান্ত করেন। লোহার চেয়ারের আঘাতে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

Also Read: আজমতের ডাকা মূল্যায়ন সভায় যা বললেন নেতারা

আহত ব্যক্তিরা হলেন গাছা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য হাসান উদ্দিন মাস্টার, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা এমারত হোসেন, গাছা থানা মৎস্যজীবী লীগ নেতা আশিকুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ফরহাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের সমর্থক রমজান আলী ও রফিকুল ইসলাম।

হট্টগোলের বিষয়ে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কর্মী আহম্মদ আলী বলেন, ঘটনা তেমন বড় নয়। তবে লোহার চেয়ার ছোড়ায় কয়েকজন আহত হয়েছেন।

গাছা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আদম আলী, দলীয় কর্মী মো. শাহজাহান আলী, শামছুল হক প্রমুখ।

মূল্যায়ন সভায় বক্তব্য দেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লা খান

অনুষ্ঠানে হট্টগোলের বিষয় আজমত উল্লা খান বলেন, ‘যেকোনো সভায় এ ধরনের হট্টগোল করার অর্থ হলো দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন যখন আমাদের মিটিংয়ে এসে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তৎপরতা চালায়, একজন আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে সেটা দুঃখজনক, লজ্জাজনক।’

আজমত উল্লা খান নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘দলের নেতা-কর্মী হয়ে যাঁরা নৌকাকে পরাজিত করেছেন, তাঁদের লজ্জা থাকা উচিত। মঞ্চে যাঁরা বক্তব্য দিতে চান, কথা বলতে চান, তাঁরা সবাই তাঁর নিজ কেন্দ্রের ফলাফল আগে ঘোষণা করবেন। তারপর কথা বলা শুরু করবেন। আপনার কেন্দ্রের ফলাফল জানা না থাকলে কথা বলার প্রয়োজন নেই। দলকে সুসংগঠিত করতে হবে, যাতে আগামী দিনে কেউ আবার দলের মধ্যে ঢুকে বিভ্রান্তি করে আবার নৌকাকে না হারিয়ে দিতে পারে।’

Also Read: ভোটে আজমত সব এলাকায় পিছিয়ে, এগিয়ে শুধু টঙ্গীতে

আজমত উল্লা খান বলেন, ‘বুকে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করেন আপনার ছেলেরা কী করছে। যিনি নিজের স্ত্রীকে নৌকার পক্ষে আনতে পারেন না, সন্তানকে আনতে পারেন না, তাঁর আওয়ামী লীগের থাকা উচিত হবে না। সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, সব রিপোর্ট করা হবে।’

নির্বাচনে হারের বিষয়ে আজমত উল্লা বলেন, তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি যদি বিএনপি-জামায়াতের কাছে হারতেন, তাহলে তাঁর দুঃখ থাকত। তিনি ভাবতেন, সংগঠনকে ঠিকমতো গোছানো হয়নি। কিন্তু তাঁকে নিজ দলের নেতা-কর্মীরা হারিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কাছে হেরেছেন। এ জন্য ভেতরে রক্তক্ষরণ হলেও মুখে অন্তত হাসি রয়েছে।

Also Read: গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হলেন আজমত উল্লা খান