যশোর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে তেল চুরি, দুজনকে হাতেনাতে ধরলেন শিক্ষার্থীরা

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বাসে করে চুরি করা তেল বিক্রি করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। এ ঘটনায় জড়িতদের হাতেনাতে ধরেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বিভিন্ন গাড়ি থেকে তেল চুরি করে বিক্রি করতে নেওয়ার সময় বাসের চালক ও সহকারীকে হাতেনাতে ধরেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের বহনকারী শাপলা বাস থেকে চুরিকৃত প্রায় ৫০ লিটার তেল জব্দ করা হয়। আজ সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে এ ঘটনা ঘটে।

সকালেই শিক্ষার্থীরা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পরিবহন প্রশাসনকে অবহিত করলে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই বাসের ভেতর থেকে প্রায় ৫০ লিটার তেল জব্দ করেন। শাপলা বাসের চালক মিজানুর রহমান, তাঁর সহকারী শামীম আহমেদ।

এ ঘটনায় দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক শিমুল হোসেন রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ জানান। এরপর প্রক্টর এস এম নূর আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিমুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তেল চুরির বিষয়টি জানালে আমি, সহকারী প্রক্টরসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় ৫০ লিটার তেল জব্দ করি। এরপর রেজিস্ট্রার বরাবর আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, যবিপ্রবির পরিবেশবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (ইএসটি) বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান হোসেন পরিবহন থেকে তেল চুরি করে বিক্রির তথ্য আগেই জানতেন। হাতেনাতে ধরার জন্য আজ ভোর চারটা থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের ফটকে অপেক্ষায় থাকেন। পরবর্তী সময়ে সকাল ছয়টার দিকে শাপলা বাসটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় হান্নান হোসেন বাসে উঠেই আসনের নিচে রাখা তেলের ড্রাম খুঁজতে থাকেন। এ সময় বাসের চালক মিজানুর রহমান ও সহকারী শামীম আহমেদ তেল চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন।

ইএসটি বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান হোসেন বলেন, ‘আমি আগে থেকেই জানতাম কী প্রক্রিয়ায় গাড়ির তেল চুরি করে বিক্রি করা হয়। হাতেনাতে ধরব বলে আমরা কয়েক বন্ধু ভোর থেকে পাহারা দিচ্ছিলাম। সকালে শাপলা বাসটি শহরের দিকে যাওয়ার জন্য বের হলে আমি বাসে উঠে পড়ি। সিটের তলায় তেলের পাত্র খোঁজাখুঁজি করা দেখে চালক ও হেলপার চুরির বিষয়টি স্বীকার করে নেন।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা বাসচালক মিজানুরের বক্তব্য ভিডিও রেকর্ড করেন। ওই ভিডিও বার্তায় মিজানুর রহমান জানান, তেল চুরির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন খাতের কর্মচারীদের দুইটা পক্ষ জড়িত। ১০ থেকে ১২ বছর ধরে গাড়ি থেকে তেল চুরির বাণিজ্য চলে আসছে।

শাপলা বাসের চালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই তেল চুরির ঘটনার সঙ্গে কমবেশি সব চালকই জড়িত। আমরা ২০ থেকে ৩০ দিনে অল্প অল্প করে তেল জমিয়ে রাখি। ২০ থেকে ৩০ লিটার হলে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাই। ৯০ টাকা প্রতি লিটার দরে শানতলার একটি পেট্রলপাম্পের পাশে বিক্রি করা হয়। আজকের চুরি করা তেল শাপলা বাস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের গাড়ি থেকে নেওয়া।’