রাকসু নির্বাচনে ব্যালট নম্বর বরাদ্দসংক্রান্ত নীতিমালা সংস্কারে প্রার্থীরা আবেদনপত্র নিয়ে আসলে তা গ্রহণ করেনি নির্বাচন কমিশন। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে
রাকসু নির্বাচনে ব্যালট নম্বর বরাদ্দসংক্রান্ত নীতিমালা সংস্কারে প্রার্থীরা আবেদনপত্র নিয়ে আসলে তা গ্রহণ করেনি নির্বাচন কমিশন। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে

রাকসু নির্বাচন

প্যানেলভিত্তিক ব্যালট নম্বর বরাদ্দে সংস্কার চান কয়েকজন প্রার্থী, আবেদন নিল না কমিশন

চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হল সংসদ নির্বাচনের ব্যালট নম্বর বরাদ্দ দেওয়াকে ‘বৈষম্যমূলক’ বলে দাবি করেছেন কয়েকজন প্রার্থী। তাঁরা প্রক্রিয়াটিকে সংস্কারের মৌখিক আবেদন জানিয়েছেন। এ বিষয়ে কোনো লিখিত আবেদন গ্রহণ না করলেও আলোচনার আশ্বাস দিয়েছে কমিশন।

আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে এ দাবিতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের কয়েকজন প্রার্থী। তাঁরা হলেন হলটির স্বতন্ত্র সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী কাউসার হাসান, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) আরমান হোসাইন, বিতর্ক ও সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ, একই পদে সহসম্পাদক শাহারিয়ার হাসান, কমনরুমবিষয়ক সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক আমজাদ হোসেন। তাঁদের দাবি, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের প্যানেলকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বিপরীতে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী, প্রার্থীদের তালিকা প্যানেল আকারে জমা হলে লটারির মাধ্যমের প্যানেলের ক্রমধারা নির্ধারিত হবে। নির্বাচন কমিশন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নামের তালিকা বাংলা বর্ণমালার আদ্যক্ষর ক্রমানুসারে প্রকাশ করবে।

বেলা ১১টার দিকে হলটির প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে যান। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা কামাল আকন্দ, প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মো. সেতাউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। প্রার্থীরা তাঁদের জানান, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেরে বাংলা ফজলুল হক হলে ব্যালট নম্বর বরাদ্দের লটারি হয়েছে। সেখানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেলকে ১ নম্বর ব্যালট দেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্যানেল পূর্ণাঙ্গ হওয়ায় লটারি ছাড়াই দেওয়া হয়েছে। পরে ছাত্রদল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কাউসার হাসানের সঙ্গে শুধু ভিপি পদের লটারি হয়। সেখানে ২ নম্বর ব্যালট পায় ছাত্রদল আর ৩ নম্বর পান কাউসার।

শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রতিটি একক পদে লটারি দিতে হবে। এই লটারিতে প্যানেল ধরে করা যাবে না। এটি বৈষম্যমূলক। যদি এ ধরনের নীতিমালা হয়েও থাকে সেটি সংস্কার করতে হবে। এখনো চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়নি। একটি রাজনৈতিক দলের প্যানেলকে সুযোগ দিতে আগেভাগেই এটি করা হচ্ছে।

স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী কাউসার হাসান বলেন, নির্বাচন কমিশন এমন নীতিমালা করেছে, যেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে ভুক্তভোগী হবেন। এভাবে ব্যালট নম্বর বরাদ্দ দেওয়া বৈষম্যমূলক। এটি সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে।

প্রার্থীদের আপত্তির জবাবে নির্বাচন কমিশনের তিন কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা প্যানেল ধরেই ব্যালট নম্বর বরাদ্দ দিচ্ছেন। এই নীতিমালা অনেক আগেই প্রকাশ করা হয়েছে। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এফ নজরুল ইসলাম ওই প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আবেদন দিতে হবে না। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আলোচনায় বসবেন।

প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশে বিলম্ব

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম। আজ তালিকা প্রকাশের কথা থাকলেও বেলা ২টা পর্যন্ত তা হয়নি।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ বিলম্ব হওয়ার বিষয়ে কথা বলছেন রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে

আজ সকাল থেকে তালিকার জন্য অপেক্ষায় আছেন প্রার্থীরা। বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আমাদের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার কথা। সেই কাজ একদম শেষের দিকে। আমরা বিভিন্ন হল থেকে তালিকা পাওয়ার পর সেগুলো সমন্বয় করছি। কিছুটা দাপ্তরিক কাজ এখনো বাকি আছে। শেষ হলেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশ করব।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও যুক্ত করে বলেন, ‘আমাদের তফসিলের নোটিশে কোথাও সকাল ১০টা বা কোনো নির্দিষ্ট সময়ের কথা উল্লেখ ছিল না। আমরা বলেছি, ১০ তারিখে তালিকা প্রকাশ করা হবে। এর অর্থ হলো, রাত ১২টার আগপর্যন্ত যেকোনো সময় আমরা তা প্রকাশ করতে পারি।’

এর আগে বেশ কয়েকবার তফসিল পরিবর্তন এবং নির্বাচনের তারিখ পেছানো হয়েছিল। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ২৩টি পদের বিপরীতে ২৬০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২০ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৫ জন ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৬ জন লড়তে চান।

নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী আজ প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি হবে। এরপর আগামী শনিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে ১৪ সেপ্টেম্বর রাকসু ও হল সংসদে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।