
২০১৫ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নাশকতার ঘটনায় তিনটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়েছিল। এক দশকের বেশি সময় পর সব কটি মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব মামলার আসামিরা বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মী ছিলেন।
আজ সোমবার বিকেলে কুমিল্লা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) কাইমুল হক ওরফে রিংকু মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। গত সপ্তাহে এই মামলাগুলো প্রত্যাহার ও সম্পৃক্ততা না থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
কাইমুল হক বলেন, ২০১৫ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তৎকালীন সরকারের দায়ের করা মামলাগুলো রাজনৈতিক মামলা বিবেচনায় প্রত্যাহারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। আর ঘটনায় জড়িত না থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তিনটি মামলা থেকেই অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জানান, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুরে একটি বাসে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনায় আট যাত্রী নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করে পুলিশ। মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৭৮ জনকে চার্জশিটের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই মামলায় বাদী ছিলেন চৌদ্দগ্রাম থানার তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তা নুরুজ্জামান হাওলাদার। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুই মামলার শুনানিতে বেগম খালেদা জিয়ার সম্পৃক্ততা প্রমাণিত না হওয়ায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত–২–এর বিচারক সফিকুল ইসলাম তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। কারণ, ঘটনার সময় বেগম খালেদা জিয়া গুলশানের বাসায় বালুর ট্রাক দ্বারা অবরুদ্ধ ছিলেন।
অপর দিকে ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রামের হায়দারপুর এলাকায় কাভার্ড ভ্যান পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নাশকতার মামলায়ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়। পরে এই মামলায় আরও ১০ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। এই মামলারও বাদী চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার। এ মামলায়ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আফরোজা শিউলি তাঁকে অব্যাহতি দেন।
কাইমুল হক বলেন, হয়রানির জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে এসব মামলায় জড়ানো হয়েছিল। মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। এখন থেকে খালেদা জিয়া ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় কোনো মামলা নেই।