বান্দরবান জেলার মানচিত্র
বান্দরবান জেলার মানচিত্র

বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আবারও মাইন বিস্ফোরণে একজন পা হারিয়েছেন

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির আশারতলী এলাকার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে একজনের পা উড়ে গেছে। তাঁকে উদ্ধার করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই নিয়ে জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এই সীমান্ত এলাকায় মাইন বিস্ফোরণে সাতজন পা হারিয়েছেন।

নাইক্ষ্যংছড়ির স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে আশারতলী সীমান্তের ৪৬ ও ৪৭ নম্বর সীমান্ত পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে মো. তৈয়ব (৩৫) নামের একজনের বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাঁকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর চিকিৎসকেরা কক্সবাজারের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। মো. তৈয়ব নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের আশারতলী ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কমবনিয়াপাড়ার ছাবের আহমেদের ছেলে।

কমবনিয়াপাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মো. তৈয়ব দরিদ্র দিনমজুর। দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে নানা কাজ করেন তিনি। শূন্যরেখা থেকে ৩০০–৩৫০ মিটার মিয়ানমারের ভূখণ্ডের ভেতরে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আশারতলী–সংলগ্ন চাকঢালা চেরারমাঠে প্রায় এক সপ্তাহ আগে গত ২৯ মার্চ মাইন বিস্ফোরণে আরেকজনের পা উড়ে গেছে বলে নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চাকঢালা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফরিদুল আলম জানিয়েছেন।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চাকঢালা, জামছড়ি ও আশারতলীতে ছয়টি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় সাতজন পা হারিয়েছেন। সাতজনেরই বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ উড়ে গেছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক জানিয়েছেন, সব কটি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা শূন্যরেখা থেকে ৩০০–৪০০ মিটার মিয়ানমারের ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে ঘটেছে। আজ মো. তৈয়বও ৩০০ থেকে ৪০০ মিটারের ভেতরে গিয়ে আহত হয়েছেন। মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি বর্তমানে সীমান্ত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। রোহিঙ্গা গোষ্ঠীগুলোর প্রবেশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য তাঁরা সীমান্তের কাছাকাছি মাইন পুঁতে রেখেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নানা প্রয়োজনে সীমান্তের লোকজন শূন্যরেখা পার হলে মাইন বিস্ফোরণের শিকার হচ্ছেন।