Thank you for trying Sticky AMP!!

গরমে দিন আনে দিন খায় এমন খেটে খাওয়া মানুষদের কষ্ট বেশি

এপ্রিলের বাকি দিনগুলোতেও থাকবে এমন গরম, তাপমাত্রা হতে পারে ৪২ ডিগ্রি

প্রায় সারা দেশেই গতকাল সোমবার তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এমনকি চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল গতকাল, যা পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় রেকর্ড করা হয়েছে। খেপুপাড়ায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশজুড়ে চলমান এই তাপপ্রবাহ এপ্রিল মাসের বাকি সময়জুড়েও থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের এপ্রিল মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস ও আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, চলতি মাসের শুরু থেকেই তাপপ্রবাহ দেখা দিয়েছে। মাঝখানে বৃষ্টির কারণে কিছুটা সময় তাপমাত্রা সহনীয় ছিল। ১১ এপ্রিল থেকে দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে, যা এ মাসজুড়েই অব্যাহত থাকবে।

Also Read: খেপুপাড়ায় ৪৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল সন্ধ্যায় জানিয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা আজ মঙ্গলবারও অব্যাহত থাকবে। গতকাল রাঙামাটিতে ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি, পাবনার ঈশ্বরদীতে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি, বান্দরবানে ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি, মোংলায় ৩৯ ডিগ্রি, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৩৯ ডিগ্রি ও পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। সিলেট, নেত্রকোনার মতো কয়েকটি অঞ্চল বাদে সারা দেশেই তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, এপ্রিল মাসের বাকি সময়জুড়ে দেশে তাপপ্রবাহ থাকবে। তবে কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ওঠানামা করতে পারে। এ মাসে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠার আশঙ্কা রয়েছে।

সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে থাকে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, সিলেট বিভাগের দু–এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে।

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, ২০ এপ্রিলের পর দেশের কোথাও কোথাও স্থানীয়ভাবে অস্থায়ীভাবে দমকা বাতাস, ঝোড়ো হাওয়াসহ কালবৈশাখী ও বজ্রপাত হতে পারে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে।

বঙ্গোপসাগরে এপ্রিলে এক থেকে দুটি লঘুচাপ হতে পারে বলে এ মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্ভাবাসে জানিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে একটি লঘুচাপ নিম্নচাপে বা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলেও জানিয়েছিল তারা। অবশ্য আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এপ্রিলে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।

৪৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ৪৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থাৎ ১৯৮১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে গতকালই খেপুপাড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল।

সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, দক্ষিণাঞ্চলের আকাশ মেঘমুক্ত থাকা এবং ভারত থেকে গরম বাতাস দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ করায় খেপুপাড়ায় এমন তাপমাত্রা ছিল বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উত্তপ্ত এবারের পয়লা বৈশাখ

গত ছয় বছরের মধ্যে এবারের পয়লা বৈশাখ ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উত্তপ্ত। এবার পয়লা বৈশাখে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাঙামাটিতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই দিনে গত বছর চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল।

এর আগের চার বছর এত তাপমাত্রা ছিল না পয়লা বৈশাখে। যেমন ২০২২ সালের পয়লা বৈশাখে রাজশাহীতে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২১ সালে রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২০ সালে রাঙামাটিতে ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১৯ সালে বাগেরহাটের মোংলায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল।