মায়ের জানাজায় হাতকড়া-ডান্ডাবেড়ি পরানোকে ‘অমানবিক’ বলল মানবাধিকার কমিশন
গাজীপুরের বিএনপি নেতা আলী আজমকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানো অবস্থায় মায়ের জানাজায় নেওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানায় কমিশন।
মায়ের মৃত্যুর খবরে গত মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম। নিজ বাড়িতে নেওয়ার পর তিনি নিজেই মায়ের জানাজা পড়ান। এ সময় তাঁর হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানো ছিল।
হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানো অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। গতকাল বুধবার ঘটনাটি নিয়ে একটি বিবৃতি দেয় মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানেই বলা আছে, ‘বিচার বা দণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না।’
মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনপূর্বক প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার পরও একজন বন্দীকে মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে নিয়ে যাওয়া কেবল অমানবিকই নয়, বরং বাংলাদেশের সংবিধান ও মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার বা দণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ডান্ডাবেড়ি পরানো–বিষয়ক উচ্চ আদালতের যে নির্দেশনা রয়েছে, সেটাও এ ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়নি, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
Also Read: ‘এটা মধ্যযুগে ফেরার বীভৎস উদাহরণ’
কমিশনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েনসহ যথাযথ নজরদারির অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া সমীচীন ছিল। কিন্তু মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে অংশগ্রহণ অত্যন্ত অমানবিক।
এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণে যত্নবান হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে কমিশনের বিবৃতিতে জানানো হয়।