
গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মী শ্রমিক কল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল থেকে মুনাফা পাওয়ার অধিকারী বলে রায় দিয়েছিলেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। এর বৈধতা নিয়ে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দিয়ে ওই বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন। হাইকোর্টের দেওয়া এ–সংক্রান্ত রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টের দেওয়া স্থিতাবস্থার আদেশ স্থগিত করা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ১০৬ কর্মীর করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেওয়া হয়। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান।
আদালতে সাবেক কর্মীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী গোলাম রাব্বানী শরীফ। অন্যদিকে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ–আল–মামুন।
পরে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের দেওয়া স্থিতাবস্থার আদেশ চেম্বার আদালত স্থগিত করেছিলেন। এ স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ থাকছে না। ফলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় অনুসারে সাবেক কর্মীদের মুনাফা পেতে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে আইনি কোনো বাধা নেই।’
অবশ্য গ্রামীণ কল্যাণের আইনজীবী আবদুল্লাহ–আল–মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মী শ্রমিক কল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল থেকে মুনাফা পাওয়ার অধিকারী বলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছিলেন। এই রায় কেন বেআইনি হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। রুল নিষ্পত্তির মধ্য দিয়েই ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত সঠিক কি না, তা চূড়ান্ত হবে।’
আইনজীবীদের তথ্যমতে, গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মী শ্রমিক কল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল থেকে মুনাফা (২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত) পেতে শ্রম আইনের ২৩১ ধারায় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা (ব্যাখ্যামূলক) করেন। এর শুনানি নিয়ে গত ৩ এপ্রিল শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল ওই রায় দেন। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৩০ মে হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ওই রায় কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে ওই বিষয়ে পক্ষগুলোকে ছয় মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন হাইকোর্ট। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে সাবেক ১০৬ কর্মী লিভ টু আপিল করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের দেওয়া স্থিতাবস্থার আদেশ স্থগিত করে ১০৬ কর্মীর করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে ১০ জুলাই শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়।