Thank you for trying Sticky AMP!!

পেঁয়াজের দাম কমে প্রায় আগের পর্যায়ে ফিরেছে

পেঁয়াজ। ফাইল ছবি

ভারত রপ্তানি বন্ধ করার পর বাংলাদেশে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম হু হু করে বেড়েছিল। এক সপ্তাহ পর গতকাল রোববার দাম কমে প্রায় আগের পর্যায়েই ফিরে এসেছে। দেশে আমদানি পণ্যের অন্যতম পাইকারি মোকাম চট্টগ্রামের চাক্তাই ও খাতুনগঞ্জে গতকাল রোববার প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ মানভেদে বিক্রি হয়েছে ৫০, ৫৫ ও ৬০ টাকা দরে। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা সবচেয়ে ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। সেই দেশের নিম্নমানের পেঁয়াজ ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ভারতের বিকল্প দেশগুলো থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ার ফলে পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব পড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এর পরদিন থেকে দেশের বাজারে এই পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারেই দাম বেড়ে মিয়ানমারের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৭৫ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৯০ টাকায় বিক্রি হয়। খুচরা বাজারে তা ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়।

দাম বাড়ার পর ব্যবসায়ীরা বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেন। মিয়ানমার থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন পেঁয়াজ আমদানি হতে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েও তিনটি চালানে মিসর, মিয়ানমার ও চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। আবার গত শুক্র ও শনিবার কয়েকটি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়। নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে এসব পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছিল। আমদানির পাশাপাশি জেলা প্রশাসনগুলোও বাজারে তদারকি শুরু করে। সব মিলিয়ে দাম কমে আসে।

ব্যবসায়ী ও স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর গত এক সপ্তাহে প্রায় সাত হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমার ও মিসর থেকে এসব পেঁয়াজ আমদানি হয়। এখন টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ টন পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরে মিসর, মিয়ানমার ও চীন থেকে আনা তিনটি চালান খালাসের পর নতুন করে আরও চালান আসছে। পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কমছে।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিঞা মার্কেটের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রথম আলোকে বলেন, জেলা প্রশাসনের তদারকি ও পেঁয়াজ আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মূলত দাম কমে গেছে। ভারতের বিকল্প বাজার থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রাখতে হবে। তাহলে সংকট হবে না। দামও বাড়বে না। তিনি জানান, ভারত থেকে যেসব পেঁয়াজ গত শুক্র ও শনিবার দেশে আমদানি হয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগ নিম্নমানের। টনপ্রতি ৮৫০ ডলার দরে (কেজিপ্রতি ৭২ টাকা) কেনা এসব পেঁয়াজে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হবেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, সবজি ও মসলা হিসেবে দেশে পেঁয়াজ ব্যবহৃত হয়। দাম বাড়ার পর সবজি হিসেবে পেঁয়াজের ব্যবহার কমেছে। এখন মসলা হিসেবেই ব্যবহার হচ্ছে পেঁয়াজ। এতেও পণ্যটির স্বাভাবিক চাহিদায় ভাটা পড়েছে। আবার পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য হওয়ায় বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। কারণ, এই পণ্যের ৮০ শতাংশই পানি। প্রতিদিন ওজন কমতে থাকে। সংরক্ষণের সময় কিছু পেঁয়াজ নষ্টও হয়। চাহিদা কমে যাওয়ায় অবিক্রীত পেঁয়াজের মান কমছে।

পাইকারি বাজারে দাম কমার পর খুচরা বাজারেও পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। গতকাল চট্টগ্রামের খুচরা বাজারগুলোতে ভারত থেকে
আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়। কোথাও কোথাও ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৭৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৬০ টাকায়।