Thank you for trying Sticky AMP!!

ইসলামী ব্যাংকে নিজেদের সব শেয়ার ছেড়ে দিল সেই সৌদি কোম্পানি

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি

এবার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) এক দিনে ইসলামী ব্যাংকের বিপুল শেয়ারের হাতবদল হয়েছে। টাকার অঙ্কে হাতবদল হওয়া শেয়ারের মূল্য ৫২৫ কোটি টাকা। ইসলামী ব্যাংকের এ লেনদেনের ওপর ভর করে আজ মঙ্গলবার সিএসইতে ৫৩৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। মোট লেনদেনের ৯৮ দশমিক ৫০ শতাংশই ছিল ইসলামী ব্যাংকের। বাকি অন্য সব কোম্পানি মিলে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি টাকার।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের মালিকানায় থাকা সৌদি কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সি তাদের হাতে থাকা ব্যাংকটির সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।

Also Read: ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’

বিদেশি এই কোম্পানির হাতে ইসলামী ব্যাংকের ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার ছিল। ইসলামী ব্যাংকের মোট শেয়ারের সংখ্যা ১৬০ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৮টি। সেই হিসাবে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ারের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ কোটি ৮ লাখের কিছু বেশি। আজ সিএসইতে ইসলামী ব্যাংকের ১৬ কোটি ৯ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়। অর্থাৎ আরবসাস হাতে থাকা পুরো শেয়ারই এদিন বিক্রি করে দেওয়া হয়। আজ সিএসইতে হাতবদল হওয়া ইসলামী ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৩২ টাকা ৩০ পয়সা।

বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের মালিকানার বড় অংশই রয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের হাতে। ব্যাংকটি ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপের হাতে যাওয়ার পর এটির মালিকানা থেকে একে একে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো সরে যেতে শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ আজ সৌদি কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সি তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেয়।

এর আগে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পাঠানো ইসলামী ব্যাংকের এক চিঠিতে বলা হয়েছিল, আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়টি ব্যাংককে জানিয়েছে। তার ভিত্তিতে ২৬ জুলাই পরিচালনা পর্ষদের সভায় তা অনুমোদিত হয়। মুসাইদ আবদুল্লাহ এ আল-রাজি আরবসাসের পক্ষে দীর্ঘদিন ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার মাধ্যমে এখন চূড়ান্তভাবে ব্যাংকটির মালিকানা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিল বিদেশি এ প্রতিষ্ঠান।

Also Read: ইসলামী ব্যাংকে পরিচালনা পর্ষদে প্রতিনিধি পরিবর্তন করছে মালিকপক্ষ 

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইসলামী ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ থেকে এসব শেয়ার বিক্রি করা হয়। আর কেনা হয়েছে এস আলমের মালিকানায় থাকা আভিভা ফাইন্যান্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আভিভা ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট নামের ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে। তবে শেয়ার কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত দুই ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি। পরে এ বিষয়ে জানতে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনে সাড়া দেননি।

১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ২০১১ সাল পর্যন্ত একরকম নির্বিঘ্নেই ব্যাংকটি পরিচালনা করে। ২০১১ সালের নভেম্বরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি নতুন নিয়ম করে, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির পরিচালক পদে থাকতে হলে ওই কোম্পানিটির ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে। এই বিধান করার পর ব্যাংকটিতে জামায়াত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যে কিছুটা ভাটা পড়ে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ২০১৭ সালে বাজার থেকে শেয়ার কিনে ব্যাংকটির মালিকানায় চলে আসে এস আলম গ্রুপ। এরপর দেশি-বিদেশি অনেক কোম্পানি ও ব্যক্তি শেয়ার ছেড়ে দিতে শুরু করে।

Also Read: ইসলামী ব্যাংকের কোনো শাখা ঋণ দিতে পারবে না

বিদেশি কোম্পানির শেয়ার বিক্রির বিষয়ে জানতে ইসলামী ব্যাংকের কোম্পানি সচিব জে কিউ এম হাবিবউল্লাহর সঙ্গে মুঠোফানে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সাধারণত কোম্পানি–সংক্রান্ত বিষয় দেখভাল করেন কোম্পানি সচিব।