এলটিইউ

১০ কোম্পানিই দিল ৪০% ভ্যাট

দেশের শীর্ষ ১০ কোম্পানি ৪০ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা ভ্যাট দিয়েছে। মোট আদায় হয়েছে ১ লাখ ৩০০ কোটি টাকা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)

দেশের মাত্র ১০টি কোম্পানিই মোট ভ্যাটের ৪০ শতাংশের বেশি দিয়েছে। এই ১০ কোম্পানির সব কটিই বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) আওতায় নিবন্ধিত। গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১–২২ অর্থবছরে দেশের শীর্ষ ভ্যাটদাতা ১০ কোম্পানির কাছ থেকে ৪০ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। আর সব মিলিয়ে ভ্যাট বিভাগ ১ লাখ ৩০০ কোটি টাকা আদায় করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

এলটিইউর এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ভ্যাটদাতা তালিকায় শীর্ষ স্থানে আছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি। ২০২০-২১ অর্থবছরেও এই তিন কোম্পানিই শীর্ষ তিনে ছিল।

ভ্যাট তথা মূল্য সংযোজন কর (মূসক) দেয় ভোক্তা। বিভিন্ন কোম্পানি ভোক্তার কাছ থেকে সেই ভ্যাট সংগ্রহ করে এনবিআরের বিভিন্ন দপ্তরে জমা দেয়। প্রতিবছর যত ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আদায় হয়, এর অর্ধেক আদায় করে থাকে এলটিইউগুলো। সর্বশেষ ২০২১–২২ অর্থবছরে এলটিইউ প্রথমবারের মতো ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আদায় করেছে। এলটিইউতে নিবন্ধিত ১১০টি কোম্পানির কাছ থেকে ৫২ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, যা গতবারের চেয়ে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বেশি। তবে গত অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে।

কে কত দিল

সর্বোচ্চ ভ্যাটদাতা বিএটিবির দেওয়া ভ্যাটের পরিমাণ ২৪ হাজার ৭২৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ১৮৫ কোটি টাকা কম।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা দেশের বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন দিয়েছে ৪ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। কোম্পানিটি আগের বছরের চেয়ে ৩৩ কোটি টাকা কম দিয়েছে। ভ্যাটের শীর্ষ দশে রবি ও বাংলালিংক—এই দুটি মোবাইল ফোন অপারেটরও আছে। তাদের অবস্থান যথাক্রমে তৃতীয় ও ষষ্ঠ। তবে এই দুটি কোম্পানি আগেরবারের চেয়ে বেশি ভ্যাট দিয়েছে।

এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তাদের পক্ষ থেকে খুদে বার্তার মাধ্যমে বলা হয়, ‘সরকারি কোষাগারে রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে গত ২৫ বছর গ্রামীণফোন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে আসছে। স্বচ্ছভাবে ব্যবসা পরিচালন এবং রাজস্ব প্রদানে এনবিআরের সঙ্গে একযোগে কাজ করে চলেছে গ্রামীণফোন।’

ভ্যাট আদায়ে চতুর্থ স্থানে আছে পেট্রোবাংলা। প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাট প্রদানে ৩০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটি ২ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা ভ্যাট দিয়েছে। ইউডিটিসিএল ১ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা দিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।

শীর্ষ ১০ খাতের মধ্যে আদায় কমেছে দুটিতে

সিগারেট, মুঠোফোন, ওষুধ, ব্যাংক, গ্যাস, বিদ্যুৎ বিতরণ, কোমল পানীয়, সাবান, সিমেন্ট ও পানি সরবরাহ—শীর্ষ এই ১০টি খাত থেকে এলটিইউ তাদের মোট রাজস্বের সাড়ে ৯৪ শতাংশ আদায় করেছে। আদায়ের পরিমাণ ৪৯ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা। এই ১০টি খাতের মধ্যে সাবান ও সিমেন্ট খাতে যথাক্রমে ১০ ও ৮ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর মানে, ব্যবসা খুব একটা ভালো যায়নি।

এ বিষয়ে এলটিইউর একজন শীর্ষ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, দেশেও বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রভাব পড়েছে। তাই অর্থবছরের শেষ দিকে ভ্যাট আদায়ে কিছুটা শ্লথগতি ছিল। তবে এলটিইউ প্রথমবারের মতো ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি আদায় করতে পেরেছে, এটা স্বস্তির।