পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঁচা চামড়ার আড়তদার-ব্যবসায়ীরা চামড়া সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চামড়া যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য দ্রুত চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন দেশের তিন অঞ্চলের তিনজন ব্যবসায়ী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রণব বল, মনিরুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম।

প্রথম আলো এবারের কোরবানির ঈদে চামড়ার ব্যবসা কেমন জমবে বলে মনে করছেন?
গিয়াস উদ্দীন কোরবানির ঈদ সামনে রেখে যশোরে পশুর হাট ভালোই জমেছে। তাতে আশা করা যায়, চামড়ার হাটও ভালোই জমবে। গত বছরের তুলনায় এবার মোকাম ভালো যাবে বলেই মনে হচ্ছে।
প্রথম আলো গত বছর চামড়া বেচাকেনায় কেমন ব্যবসা হয়েছে?
গিয়াস উদ্দীন গত বছর ঈদের দিনে হাটে বসেই লবণবিহীন ২৫০টি ও পরে হাটের দিনে লবণযুক্ত ৩০০টি গরুর চামড়া কিনেছিলাম। তাতে সাড়ে ৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে খরচ বাদে ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল
প্রথম আলো এবার প্রস্তুতি কেমন?
গিয়াস উদ্দীন এ বছর পশুর হাটের গরু–ছাগল বেচাকেনা ভালো। এ জন্য কাঁচা চামড়া কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা পুঁজি রেখেছি। পর্যাপ্ত লবণও মজুত আছে। তবে ঢাকার ব্যাপারীদের কাছে আড়াই লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। ঈদের আগে ওই টাকা পেলে ব্যবসায় আরও টাকা বিনিয়োগের সুযোগ পেতাম। তবে ঈদের আগে পুরো টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। আমার মতো অসংখ্য ব্যবসায়ীর ঢাকার বড় ব্যাপারীদের কাছে লাখ লাখ টাকা বকেয়া পড়ে আছে। ব্যাপারীরা টাকা পরিশোধ করতে গড়ামসি করেন।
প্রথম আলো ঢাকার ব্যাপারীদের কাছে বাকিতে কাঁচা চামড়া বিক্রি করেন কেন?
গিয়াস উদ্দীন ব্যবসায় নগদ বাকি উভয় পদ্ধতিতে কেনাবেচা করতে হয়। ট্যানারিশিল্পের লোকজন সরাসরি হাটে এসে নগদ টাকায় চামড়া কিনলেও বড় ব্যাপারীদের কাছ থেকে তাঁরা বাকিতে চামড়া কেনেন। এতে কিছুটা বেশি দাম পাওয়া যায়।
প্রথম আলো যশোরের রাজারহাট এত ঐতিহ্যবাহী কেন?
গিয়াস উদ্দীন রাজারহাটে দেশের ২০ জেলার ব্যবসায়ী চামড়া কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত। কাঁচা চামড়া বিক্রির জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকেও ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন। এই হাটে চামড়া তুললে লাভ একটু কম হলেও নগদ টাকায় বিক্রি হয়ে যায়। যশোরে দুটি ট্যানারির জন্যও এই বাজার থেকে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হয়। এমনকি হেমায়েতপুরের ট্যানারির লোকজনও চামড়া কিনতে রাজারহাটে আসেন।
প্রথম আলো চামড়ার ব্যবসায় আপনাদের বড় সমস্যা কী?
গিয়াস উদ্দীন ট্যানারিশিল্পের জন্য ব্যাংক থেকে সহজে ঋণ দেওয়া হয়। আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরও সহজ শর্তে ব্যাংক থেকে ঋণ দিলে চামড়ায় আরও বেশি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।