ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান নতুন প্রকল্পের ফ্ল্যাট নিয়ে এসেছে মেলায়।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) নিয়ে জটিলতার মধ্যেও আবাসন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো কমবেশি নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এসব প্রকল্পের ফ্ল্যাট ও প্লটের প্রচার এবং বিক্রির লক্ষ্যেই তারা রিহ্যাবের আবাসন মেলায় অংশ নিয়েছে। সেখানে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই মূল্যছাড়সহ বিভিন্ন ধরনের অফার দিচ্ছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী আবাসন মেলার প্রথম দিনে মেলা ঘুরে এমন তথ্যই জানা গেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে উদ্বোধনের পর মেলাটি ক্রেতা–দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) মেলাটির আয়োজক।
দেশের শীর্ষস্থানীয় আবাসন প্রতিষ্ঠান শেল্টেক্ মেলায় ৭৬টি প্রকল্পের ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক জায়গা নিয়ে এসেছে। এসব প্রকল্প রয়েছে ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মগবাজার, ইস্কাটন, সেগুনবাগিচা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, উত্তরা, গুলশান, জলসিঁড়িসহ বিভিন্ন এলাকা এবং চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ ও দক্ষিণ খুলশীতে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় আবাসন প্রতিষ্ঠান শেল্টেক্ মেলায় ৭৬টি প্রকল্পের ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক জায়গা নিয়ে এসেছে। এসব প্রকল্প রয়েছে ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মগবাজার, ইস্কাটন, সেগুনবাগিচা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, উত্তরা, গুলশান, জলসিঁড়িসহ বিভিন্ন এলাকা এবং চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ ও দক্ষিণ খুলশীতে।
পূর্বাচলের পাশে জলসিঁড়ি আবাসন প্রকল্পে শেল্টেকের ২১টি প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্পে মোট ১৬৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৮০০ বর্গফুট। প্রতি বর্গফুটের দাম ১০ হাজার টাকা থেকে ১৪ হাজার টাকা।
শেল্টেকের উপদেষ্টা নওশাদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, পরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প হিসেবে জলসিঁড়িতে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ, পার্ক, লেকসহ প্রয়োজনীয় সব সুবিধা রয়েছে। সে কারণে অনেক ক্রেতাই এই প্রকল্পে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তিনি জানান, মেলায় ফ্ল্যাট বুকিংয়ে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যছাড় দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কিচেন কেবিনেট বিনা মূল্যে দেওয়া হবে এবং অন্দরসজ্জার নকশা স্বল্প মূল্যে করানোর সুবিধাও পাবেন গ্রাহকেরা।
আবাসন খাতের আরেক বড় প্রতিষ্ঠান ট্রপিক্যাল হোমস আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রকল্প নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির ১২টি আবাসন প্রকল্প রয়েছে, যার মধ্যে তিনটি কনডোমিনিয়াম প্রকল্প। এগুলো ৫১, ২২ ও ২০ কাঠা জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে। এসব প্রকল্পে মোট ২৫০টি ফ্ল্যাট থাকবে। ফ্ল্যাটের আয়তন ১ হাজার ৮৫০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার বর্গফুট। প্রতি বর্গফুটের দাম ১১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১৭ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। বসুন্ধরার প্রকল্পগুলোর পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রপিক্যাল হোমসের আরও ৩৭টি আবাসন প্রকল্প রয়েছে।
ট্রপিক্যাল হোমস আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রকল্প নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির ১২টি আবাসন প্রকল্প রয়েছে, যার মধ্যে তিনটি কনডোমিনিয়াম প্রকল্প।
এ ছাড়া মালিবাগে নির্মাণাধীন ৪৫ তলা একটি বাণিজ্যিক ভবনের জায়গাও বিক্রি করছে ট্রপিক্যাল হোমস। ইতিমধ্যে ভবনটির ৬৫ শতাংশ জায়গা বিক্রি হয়েছে। এখানে ৫৫০ বর্গফুট থেকে ১৭ হাজার বর্গফুট পর্যন্ত জায়গা কেনার সুযোগ রয়েছে। প্রতি বর্গফুটের দাম ১৮ হাজার ৫০০ টাকা।
ট্রপিক্যাল হোমসের পরিচালক (সেলস, মার্কেটিং, ল্যান্ড অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস) এম হক ফয়সল প্রথম আলোকে জানান, গত এক বছরে তাঁদের ব্যবসা মোটামুটি সন্তোষজনক ছিল। মেলায় তাঁরা ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক জায়গা বুকিংয়ে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
রাজধানীর উত্তরা ও বিমানবন্দরসংলগ্ন তিন হাজার বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠছে আশিয়ান সিটি। এখানে ৩ থেকে ২০ কাঠার প্লট রয়েছে। প্লটের দাম কাঠাপ্রতি ২৫ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা। প্রকল্পটির ৭৫ শতাংশ উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হয়েছে।
মেলায় প্লট বুকিং দিলে ক্রেতারা সোনার কয়েন পাবেন। এ ছাড়া এককালীন মূল্য পরিশোধ করলে গাড়ি ও মোটরসাইকেল জেতার সুযোগ রয়েছে।সৈয়দ শফিকুল ইসলাম, মহাব্যবস্থাপক, আশিয়ান গ্রুপ
আশিয়ান গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মেলায় প্লট বুকিং দিলে ক্রেতারা সোনার কয়েন পাবেন। এ ছাড়া এককালীন মূল্য পরিশোধ করলে গাড়ি ও মোটরসাইকেল জেতার সুযোগ রয়েছে।
পূর্বাচল উপশহর–সংলগ্ন এলাকায় ২৩৭ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠছে প্রিমিয়াম গেটেড কমিউনিটি এশিয়ান ডুপ্লেক্স টাউন। এখানে ৫ ও ১০ কাঠা জমির ওপর ৫৫০টি ডুপ্লেক্স বাড়ি হবে। এর মধ্যে ৪৭টি বাড়ির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে এবং ১৯টির কাজ চলছে। জমিসহ ডুপ্লেক্সের দাম ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা থেকে ১৩ কোটি টাকা। একই এলাকার ২ হাজার বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠছে পূর্বাচল এশিয়ান টাউন। এখানে ৩ থেকে ৫ কাঠার প্লট রয়েছে। প্লটের দাম কাঠাপ্রতি ১৮ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকা। এসব প্লট ১৮ থেকে ৩৬ মাসের কিস্তিতে কেনার সুযোগ রয়েছে।
এশিয়ান টাউন ডেভেলপমেন্টের পরিচালক (সেলস) মো. ওলি উল্লাহ বলেন, এবারের মেলায় ভালো সাড়া পাওয়ার আশা করছেন তাঁরা।