
আগের মতোই সাধারণ সদস্যদের ভোট ছাড়াই সমঝোতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) নতুন পরিচালনা পর্ষদ চূড়ান্ত হয়েছে। এতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, তিনজন সহসভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ও ২৯ জন পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন।
জুয়েলার্স সমিতির নতুন সভাপতি হয়েছেন ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভাসের স্বত্বাধিকারী এনামুল হক খান। তিনি আগেও জুয়েলার্স সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সানন্দা জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী রনজিৎ ঘোষ।
রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডে নিজেদের প্রধান কার্যালয়ে আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। এতে জুয়েলার্স সমিতির নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল ২০২৫-২৭ মেয়াদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত জুয়েলার্স সমিতির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। নির্বাচন বোর্ডের অন্য দুই সদস্য হলেন মো. রফিকুল আলম ও এস কে মজিবুর রহমান ইকবাল।
জুয়েলার্স সমিতিতে টানা দুই মেয়াদে সভাপতি ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর। ২০২১ সালে প্রথমবার সমিতির সভাপতি হওয়ার আগে বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেড নামে কোম্পানি চালু করেন তিনি। ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন সায়েম সোবহান আনভীর। যদিও সোনার পরিশোধন কারখানাটি এখনো চালু হয়নি।
জানা যায়, জুয়েলার্স সমিতির নির্বাচনপ্রক্রিয়া গত মাসে সম্পন্ন হয়েছে। এতে সমিতির বর্তমান সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরসহ সদ্য বিদায়ী পরিচালনা পর্ষদের ২৭ জন সদস্য নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। কারণ, বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা অনুযায়ী, টানা দুবার পর্ষদে থাকলে একবার বিরতি দিতে হবে। এ সুযোগে জুয়েলার্স সমিতির পুরোনো নেতারা সমঝোতার মাধ্যমে ৩৫ পদের বিপরীতে সমানসংখ্যক মনোনয়ন জমা দেন। সে কারণে কোনো ভোটের প্রয়োজন হয়নি।
নবনির্বাচিত কমিটি সংবাদ সম্মেলনে সবাইকে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। নবনির্বাচিত সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, ‘জুয়েলারি ব্যবসার সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করব। সমস্যার অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে সবাইকে নিয়ে কাজ করব। সোনার আমদানি সহজ করতে হবে। সোনার আমদানি সুযোগ থাকলেও প্রক্রিয়া খুব জটিল। তাতে যে দাম দাঁড়ায়, কেউ আর আমদানি করতে আগ্রহী হন না।’
সোনার অলংকার কেনায় ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে দেড় শতাংশে নামিয়ে আনতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে দর–কষাকষি করবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান এনামুল হক খান। তিনি বলেন, ‘যত দিন সোনা আমদানি প্রক্রিয়া সহজ না হয়, তত দিন পর্যন্ত ব্যাগেজ রুলসের আওতায় বিদেশ থেকে সোনার আমদানি আগের মতো সহজ করার চেষ্টা করব আমরা।’
এদিকে জুয়েলার্স সমিতির নতুন কমিটিতে তিনটি সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন আপন ডায়মন্ড হাউসের আজাদ আহমেদ, জড়োয়া হাউসের অভি রায় এবং জেসিএক্স গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডের মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী। কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন ফেন্সি জুয়েলার্সের অমিত ঘোষ।
এ ছাড়া ২৯ পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়েছেন মিলন জুয়েলার্সের মো. মিলন মিয়া, গীতাঞ্জলি জুয়েলার্সের পবন কুমার আগরওয়াল, নিউ আল ইসলাম জুয়েলার্সের তানভীর রহমান, নিউ সোনারতরী জুয়েলার্সের মো. লিটন হাওলাদার, লিলি জুয়েলার্সের বাবলু দত্ত, গৌরব জুয়েলার্সের গনেশ দেবনাথ, মুক্তা জুয়েলার্সের আশিস কুমার মন্ডল, ডায়মন্ড সিলেকশনের মিজানুর রহমান, বিপুল জুয়েলার্সের বিকাশ ঘোষ, কুঞ্জ জুয়েলার্সের সুমন চন্দ্র দে, আলভী জুয়েলার্সের মোস্তফা কামাল, নিউ সানন্দা জুয়েলার্সের ধনঞ্জয় সাহা, ডি ডামাস দি আর্ট অব জুয়েলারির শ্রীবাস রায়, ড্রিমস ইনস্ট্রুমেন্ট টেকনোলজির মো. আলী হোসেন, রিজভী জুয়েলার্সের মো. রুবেল, আনন্দ জুয়েলার্সের মো. নয়ন চৌধুরী, রিয়া জুয়েলার্সের মো. ছালাম, এসজিএল ল্যাব বাংলাদেশের ফাহাদ কামাল লিংকন, আফতাব জুয়েলার্সের গৌতম ঘোষ, মনিমালা জুয়েলার্সের মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, পরমা জুয়েলার্সের মো. তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, রোজা জুয়েলার্সের আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, আশরাফ জুয়েলার্সের মো. রফিকুল ইসলাম, ট্রাস্ট গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডের সৌমেন সাহা, মদিনা জুয়েলার্সের আককাছ আলী, রিগেল স্কাই গোল্ড অ্যান্ড জুয়েলারির মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, আল বারাকা জুয়েলার্স-২–এর শাওন আহম্মেদ চৌধুরী, আদর জুয়েলার্সের মো. নাজমুল হুদা লতিফ এবং আমন্ত্রণ জুয়েলার্সের পলাশ কুমার সাহা।
সংবাদ সম্মেলনে জুয়েলার্স সমিতির বর্তমান পর্ষদের সহসভাপতি গুলজার আহমেদ বলেন, বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ ১৫ ডিসেম্বর শেষ হবে। তখন বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে বর্তমান পর্ষদ।