অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাবে যুক্তরাজ্যের মানুষ

মূল্যস্ফীতি
প্রতীকী ছবি

জ্বালানির উচ্চমূল্যের কারণে জেরবার যুক্তরাজ্যের মানুষ। বেড়েছে সেখানকার জীবনযাত্রার ব্যয়। অনেক মানুষ খাদ্য ব্যয় কমাতে বাধ্য হয়েছেন। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের মানুষ অপ্রয়োজনীয় ব্যয় না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নতুন বছরে মানুষ যেমন নানা সংকল্প করে, অনেকটা সেভাবেই ব্যয় হ্রাস করার পণ করেছেন দেশের মানুষ। খবর দ্য গার্ডিয়ান–এর

বিভিন্ন সংস্থার পূর্বাভাস, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে যুক্তরাজ্যের সাধারণ মানুষের গড় প্রকৃত মজুরি কমে যাবে। এতে আগামী দুই বছর তাঁদের জীবনযাত্রার মান কমবে অন্তত ৭ শতাংশ। ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি চলতে পারে। ফলে গত আট বছরে দেশটির যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তার প্রভাব ম্লান হয়ে যাবে।

জরিপে অংশ নেওয়া ৬১ শতাংশ মানুষ বলেছেন, বাইরে খাওয়া, ছুটির দিনে ঘুরতে যাওয়াসহ অতি জরুরি নয়, এমন খরচ কমিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করছেন তাঁরা। খাদ্য, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, বাড়িভাড়া বা বাড়ির ঋণ পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দেওয়াই যেখানে কষ্টকর, সেখানে বাইরে খাওয়া বা ঘুরতে যাওয়া বাড়তি খরচ বলেই মনে করছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে অর্থনীতির এ অবস্থা আরও কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

কেপিএমজির জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সঞ্চয় নেই। কেবল ৪ শতাংশ মানুষ বলেছেন, জরুরি নয়, এমন খরচও নতুন বছরে বৃদ্ধি করার মতো সামর্থ্য তাঁদের আছে। এক-চতুর্থাংশই বলছেন, ২০২২ সালের মতো ২০২৩ সালেও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাবেন তাঁরা। অন্যদিকে যাঁদের সঞ্চয় আছে, তাঁদের ৪৩ শতাংশ বলেছেন, প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বা জরুরি খাতে এই অর্থ ব্যয় করবেন তাঁরা। প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন ভোক্তা জ্বালানি বা বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে ২০০১ সালের পর বিশ্ব অর্থনীতি সবচেয়ে বড় মন্দার মুখোমুখি হতে চলেছে বলেও ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’বা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাস শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

তাদের ভাষ্য, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারের এই শ্লথগতি আরও কয়েক বছর চলতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির তিন চালিকা শক্তি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছে আইএমএফ।

এ পরিস্থিতিতে জরিপে অংশ নেওয়া এক-তৃতীয়াংশ ভোক্তা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে তাঁরা একান্ত প্রয়োজনীয় ও জরুরি পণ্যে বিনিয়োগ করবেন। কেউ কেউ সব ধরনের খাতেই খরচ কমানোর কথা জানিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি যে খাতগুলোয় খরচ কমানোর কথা জরিপে উঠে এসেছে, সেগুলো হলো বাইরে খাওয়া, অপ্রয়োজনীয় পোশাক এবং রেস্তোরাঁ থেকে বাড়িতে খাবার কিনে আনা।